বাণী

কেন ফোটে কেন কুসুম ঝ'রে যায়!
মুখের হাসি চোখের জলে ম'রে যায়, হায়।।
নিশীথে যে কাঁদিল প্রিয় ব'লে
হায় নিশি-ভোরে সে কেন হায় স'রে যায়।।
হায় আজ যাহার প্রেম করে গো রাজাধিরাজ
কাল কেন সে চির-কাঙাল ক'রে যায়।।
মান-অভিমান খেলার ছলে
ফেরে না আর যে যায় চ'লে
মিলন-মালা মলিন ধূলায় ভ'রে যায়।।

বাণী

কেন তুমি কাঁদাও মোরে, হে মদিনাওয়ালা!
অবরোধবাসিনী আমি কুলের কুলবালা।।
ঈদের চাঁদের ইশারাতে কেন ডাক নিঝুম রাতে,
হাসিন ইউসুফ! জুলেখারে কত দিবে জ্বালা।।
একি লিপি পাঠালে নাথ কোরানের আয়াতে —
পড়তে গিয়ে অশ্রু-বাদল নামে আঁখি-পাতে।
বাজিয়ে শাহাদতের বাঁশি কেন ডাক নিত্য আসি';
হাজার বছর আগে তোমায় দিয়েছি তো মালা।।

বাণী

কেন	আন ফুল-ডোর আজি বিদয়-বেলা,
মোছ	মোছ আঁখি-লোর যদি ভাঙিল মেলা॥
কেন	মেঘের স্বপন আন মরুর চোখে,
ভু’লে	দিয়ো না কুসুম যারে দিয়েছ হেলা॥
যবে	শুকাল কানন এলে বিধুর পাখি,
ল’য়ে	কাঁটা-ভরা প্রাণ এ কি নিঠুর খেলা।
যদি	আকাশ-কুসুম পেলি চকিতে কবি,
চল	চল মুসাফির, ডাকে পারের ভেলা॥

বাণী

কেন কাঁদে পরান কি বেদনায় কারে কহি।
সদা কাঁপে ভীরু হিয়া রহি’ রহি’।।
সে থাকে নীল নভে আমি নয়ন-জল-সায়রে
সাতাশ তারার সতীন-সাথে সে যে ঘুরে মরে
কেমনে ধরি সে চাঁদে রাহু নহি।।
কাজল করি’ যারে রাখি গো আঁখি-পাতে
স্বপনে যায় সে ধুয়ে গোপনে অশ্রু-সাথে।
বুকে তায় মালা করি’ রাখিলে যায় সে চুরি
বাঁধিলে বলয়-সাথে মলয়ায় যায় সে উড়ি’
কি দিয়ে সে উদাসীর মন মোহি’।।

বাণী

কে তুমি দূরের সাথি
		এলে ফুল ঝরার বেলায়।
বিদায়ের বংশী বাজে
		ভাঙা মোর প্রাণের মেলায়॥
গোধূলির মায়ায় ভুলে
এলে হায় সন্ধ্যা-কূলে,
দীপহীন মোর দেউলে
		এলে কোন্‌ আলোর খেলায়॥
সেদিনো প্রভাতে মোর 
		বেজেছে আশাবরি,
পূরবীর কান্না শুনি
		আজি মোর শূন্য ভরি।
অবেলায় কুঞ্জবীথি
এলে মোর শেষ অতিথি,
ঝরা ফুল শেষের গীতি
		দিনু দান তোমার গলায়॥

বাণী

কেন	মনে জাগে উদাসিনী গৌরী উমার স্মৃতি!
আর	কত দূরে কত দেরি আনন্দময়ীর আসার তিথি।।
	কেন	পদ্মদীঘি দুলে ওঠে হৃদয়ে
	মোর	নন্দিনী মা আসে কি রাঙা চরণ ল’য়ে?
কেন	নয়নের বাতায়নে উতলা হ’ল, অশ্রুর ভ্রমর-বীথি।।
	তার মন নাই, উন্মনা চিন্ময়ী সে, তাই ছেলের কথা মনে নাই,
	শারদ-শ্রী এলো, পরমা-শ্রী কই — কাঁদি আর পথ-পানে চাই।
	ওকি	ঘরে এসে, নাম ধরে, ডেকে চ’লে যায়
		শিউলির অঞ্জলি ফেলে আঙিনায়,
	ভোরের ভৈরবী বুকে মোর কাঁদে গো, ওকি তার করুণ-গীতি।।

গীতিচিত্রঃ শারদ-শ্রী