বাণী

কে এলে মোর ব্যথার গানে গোপন-লোকের বন্ধু গোপন
নাইতে আমার গানের ধারায় এলে সুরের মানসী কোন।।
	গান গেয়ে যাই আপন মনে
	সুরের পাখি গহন-বনে
সে সুর বেঁধে কার নয়নে জানে শুধু তারি নয়ন।।
	সুরের গোপন বাসর-ঘরে
	গানের মালা বদল ক'রে
সকল আঁখির অগোচরে না দেখাতেই মোদের মিলন।।

বাণী

কেন মেঘের ছায়া আজি চাঁদের চোখে?
মোর বুকে মুখ রাখি ঝড়ের পাখি সম কাঁদে ওকে?
গভীর নিশীথের কন্ঠ জড়ায়ে
শ্রান্ত কেশভার গগনে ছড়ায়ে,
হারানো প্রিয়া মোর এলো কি লুকায়ে
		আমার একা ঘরে ম্লান আলোকে॥
গঙ্গায় তারি চিতা নিভেছে কবে,
মোর বুকে সেই চিতা আজো জ্বলে নীরবে;
স্মৃতির চিতা তার নিভিবে না বুঝি আর
		কোন সে জনমে কোন সে লোকে॥

বাণী

কলহংসিকা বাহনা পদ্মিনী-পাণি
মণি মঞ্জীরা শোভনা, ছন্দিতা বাণী।
বন্দে দামিনী-বর্ণা রাধা বৃন্দা-বন-চন্দে
মত্ত-ময়ূর-ছন্দে নাচে কৃষ্ণ প্রেমানন্দে।।
পল্লব-ঘন চক্ষে ঝরে অশ্রু-রস-ধারা
পূব হাওয়াতে বংশী ডাকে আয় রে পথ-হারা,
রুমঝুম ঝুম্ মঞ্জীর বাজে কঙ্কণ মণি বন্ধে।।
রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ ঝিম্ কেকা-বন ঘন বর্ষে
তৃষ্ণ-তৃপ্ত আত্মা নাচে নন্দালোক হর্ষে,
ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর তাল বাজে শূন্যে মেঘ মন্দ্রে।।

বাণী

কোন্ মরমীর মরম-ব্যথা আমার বুকে বেদ্না হানে
			জানি গো, সেও জানেই জানে।
আমি কাঁদি তাইতে যে তার ডাগর চোখে অশ্রু আনে,
			বুঝেছি তা প্রাণের টানে।।
বাইরে বাঁধি মনকে যত
ততই বাড়ে মর্ম-ক্ষত,
মোর সে ক্ষত ব্যথার মতো
			বাজে গিয়ে তারও প্রাণে,
			কে কয়ে যায় কানে কানে।।
উদাস বায়ু ধানের ক্ষেতে ঘনায় যখন সাঁঝের মায়া,
দুই জনারই নয়ন-পাতায় অম্‌নি নামে কাজল ছায়া।।
দুইটি হিয়াই কেমন কেমন —
বদ্ধ ভ্রমর পদ্মে যেমন,
হায়,অসহায় মূকের বেদন,
			বাজ্‌লো শুধু সাঁঝের গানে,
			পূবের বায়ুর হুতাশ তানে।।

বাণী

পুরুষ	:	কুনুর নদীর ধারে ঝুনুর ঝুনুর বাজে
		বাজে বাজে লো ঘুঙুর কাহার পায়ে।
স্ত্রী	:	হাতে তল্‌তা বাঁশের বাঁশি মুখে জংলা হাসি
		কে ঐ বুনো গো বড়ায় আদুল গায়ে।।
পুরুষ	:	তার ফিঙের মত এলোখোঁপায় ঝিঙেরি ফুল
স্ত্রী	:	যেন কালো ভোম্‌রার গা কালার ঝামর চুল।
দ্বৈত	:	ও যদি না হতো পর
		দু’জনের হতো ঘর
		একই গাঁয়ে গো।।
পুরুষ	:	ওর বাঁকা ভঙ্গিমা দেখে
		তৃতীয়ার চাঁদ ডেকে,
		হতে চাহে ওর হাঁসুলি-হার।
স্ত্রী	:	ঝিলের শঙ্খ ঝিনুক বলে
		কিনুক বিনামূলে
		আমরা হব কালার কণ্ঠেরই হার।
পুরুষ	:	ও মেয়ে না পাহাড়ি-ঝর্নার সুর
স্ত্রী	:	ও পুরুষ না কষ্টি পাথরের ঠাকুর
দ্বৈত	:	যদি বাসত ভালো, যদি আসত কাছে
		রাখতাম হিয়ায় লুকায়ে গো।।

বাণী

কিশোরী সাধিকা রাধিকা শ্রীমতী।
চির-কিশোর আরাধিকা শ্রীমতী।।
	কমলা গোলোকে
	গোপিনী ভুলোকে,
সেবিকা প্রকৃতি পরমা তপতী।।
	শ্যাম ভুবন কালো
	রাই অরুণ আলো,
হরি পূজারিণী প্রেম মূর্তিমতী।।
	ব্রজধাম বাসিনী
	লীলা বিলাসিনী,
শ্যাম নাম ভাষিণী বিরহ ভারতী।।
	শ্যাম মেঘ গলে
	রাই বিজলি দোলে,
শ্যাম পত্র কোলে রাই ফুল আরতি।।
	লয়ে যাঁহার নাম
	হরি হন রাধা শ্যাম,
সুর নর অবিরাম করে যাঁর প্রণতি।।