বাণী

আজি এ বাদল দিনে কত কথা মনে পড়ে।
হারাইয়া গেছে পিয়া এমনি বাদল-ঝড়ে।।
	আমারি এ বুকে থাকি’
	ঘুমাত সে ভীরু পাখি,
জলদ উঠিলে ডাকি’ লুকাত বুকের ’পরে।।
মোর বুকে মুখ রাখি নিবিড় তিমির কাঁদে,
আমার প্রিয়ার মত বাঁধিয়া বাহুর বাঁধে।
	কোথায় কাহার বুকে
	আজি সে ঘুমায় সুখে,
প্রদীপ নিভায়ে কাঁদি একা ঘরে তারি তরে।।

বাণী

ঝর্না	: আমি চাই পৃথিবীর ফুল ছায়া ঢাকা ঘরে খেলা।
ব্রহ্মপুত্র	: আমি চাই দূর আকাশের তারা সাগরে ভাসাতে ভেলা।।
ঝর্না	: আমি চাই আয়ু, চাই আলো প্রাণ
ব্রহ্মপুত্র	: মরণের মাঝে মোর অভিযান,
উভয়ে	: মোরা একটি বৃন্তে যেন দু’টি ফুল প্রেম আর অবহেলা।।
ব্রহ্মপুত্র	: আমি বাহির ভুবনে ছুটে যেতে চাই উদাসীন সন্ন্যাসী,
ঝর্না	: হে উদাসীন! তব তপোবনে তাই উর্বশী হয়ে আসি।
ব্রহ্মপুত্র	: মোর ধ্বংসের মাঝে উল্লাস জাগে
ঝর্না	: তাই বাঁধি নিতি নব অনুরাগে,
উভয়ে	: মোরা চিরদিন খেলি এই খেলা, গ’ড়ে তোলা ভেঙে ফেলা।।

নাটক : `হরপার্বতী’ (ঝর্না ও ব্রহ্মপুত্রের দ্বৈত গান)

বাণী

আঁধার ভীত এ চিত যাচে মা গো১ আলো আলো।
বিশ্ববিধাত্রী আলোকদাত্রী নিরাশ পরানে আশার সবিতা জ্বালো
				জ্বালো, আলো, আলো।।
	হারায়েছি পথ গভীর তিমিরে
	লহ হাতে ধ’রে প্রভাতের তীরে
পাপ তাপ মুছি’ কর মা গো২ শুচি, আশিস-অমৃত ঢালো।।
দশ৩ প্রহরণধারিণী দুর্গতিহারিণী দুর্গে মা অগতির গতি
সিদ্ধি-বিধায়িনী দনুজ-দলনী বাহুতে দাও মা শকতি।
	তন্দ্রা ভুলিয়া যেন মোরা জাগি —
	এবার প্রবল মৃত্যুর লাগি’,
রুদ্র-দাহনে ক্ষুদ্রতা দহ’ বিনাশ গ্লানির কালো।।
১. প্রভু, ২. নাথ, ৩, পান্ডুলিপিতে এখানে দুটি পঙ্ক্তি বেশি আাছে
		অচেতন প্রাণে জাগরণ তৃষ্ণা আনো আনো
		জড়তার বুকে জীবন-পিপাসা দানো দানো।

বাণী

	আল্লা ব’লে কাঁদ বারেক্ রসুল ব’লে কাঁদ্।
	সাফ্ হবে তোর মনের আকাশ উঠবে ঈদের চাঁদ।।
	ভোগে কেবল দুর্ভোগ সার, বাড়ে দুখের বোঝা
	ত্যাগ শিখ্ তুই সংযম শিখ, সেই তো আসল রোজা,
এই	রোজার শেষে ঈদ আস্‌বে, রইবে না বিষাদ।।
	আস্‌বে খোদার দরগা থেকে শিরনি তোর তরে
	কমলিওয়ালা নবীর দেখা পাবি রে অন্তরে,
	খোদার প্রেমের স্রোত বইবে ভেঙ্গে মনের বাঁধ।।
	তোর হৃদয়ের কারবালাতে বইবে ফোরাত নদী
	শহীদের দর্‌জা তোরে দেবেন আল্লা হাদী,
	দুনিয়াদারি ক’রেই পাবি বেহেশ্‌তেরি স্বাদ।।

বাণী

আজি	ঘুম নহে, নিশি জাগরণ।
	চাঁদেরে ঘিরি’ নাচে ধীরি ধীরি তারা অগণন।।
	প্রখর-দাহন দিবস-আলো,
	নলিনী-দলে ঘুম তখনি ভালো।
	চাঁদ চন্দন চোখে বুলালো
		খোলো গো নিঁদ-মহল-আবরণ।।
	ঘুরে ঘুরে গ্রহ, তারা, বিশ্ব, আনন্দে
	নাচিছে নাচুনি ঘূর্ণির ছন্দে।
	লুকোচুরি-নাচ মেঘ তারা মাঝে
	নাচিছে ধরণী আলোছায়া-সাজে,
	ঝিল্লির ঘুমুর ঝুমুঝুমু বাজে
		খুলি’ খুলি’ পড়ে ফুল-আভরণ।।

বাণী

আমার কালো মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় কে দেবে তায় ধ'রে
তারে	যেই ধরেছি মনে করি অমনি সে যায় স'রে।।
		বনে ফাকেঁ দেখা দিয়ে
		চঞ্চলা মোর যায় পালিয়ে,
দেখি	ফুল হয়ে মা'র নূপুরগুলি পথে আছে ঝ'রে।।
তার	কণ্ঠহারের মুক্তাগুলি আকাশ-আঙিনাতে
	তারা হয়ে ছড়িয়ে আছে দেখি আধেক রাতে।
		কোন মায়াতে মহামায়ায়
		রাখবো বেঁধে আমার হিয়ায়
	কাঁদলে যদি হয় দয়া তার তাই কাদিঁ প্রাণ ভ'রে।।