বাণী

আসিবে তুমি, জানি প্রিয়!
আনন্দে বনে বসন্ত এলো —
ভুবন হ’ল সরসা প্রিয়–দরশা, মনোহর।।
বনান্তে পবন অশান্ত হ’ল তাই, কোকিল কুহরে,
ঝরে গিরি–নির্ঝরিণী ঝর ঝর।।
ফুল্ল–যামিনী আজি ফুল–সুবাসে
চন্দ্র অতন্দ্র সুনীল আকাশে,
আনন্দিত দীপান্বিত অম্বর।।
অধীর সমীরে দিগঞ্চল দোলে
মালতী বিতানে পাখি পিউ পিউ বোলে,
অঙ্গে অপরূপ ছন্দ আনন্দ–লহর তোলে;
দিকে দিকে শুনি আজ আসিবে রাজাধিরাজ প্রিয়তম সুন্দর।।

বাণী

আমি	বেলপাতা জবা দেব না মাগো দেব শুধু আঁখিজল।
	মাগো হাত দিয়ে যাহা দেওয়া যায়, পাই হাতে শুধু তার ফল।।
	হাত দিয়ে ফল দিতে যাই
	(মাগো) হাতে হাতে তার ফল পাই,
	পাই অর্থ বিভব যশ
	পাই না অমৃত আনন্দ মাগো, পাই না হৃদয়ে রস।
	তাই আঁখিতে রাখিব ব’লে মা আনিয়াছি আঁখি ছলছল।।
	এবার রাখিব চোখে চোখে তোরে ছাড়িয়া দেব না আর,
	মাগো তুই চ’লে গেলে হয়ে যায় মোর ত্রিলোক অন্ধকার।
		এবার দেখিবে নিত্য হৃদয়
		তোর রাঙা চরণের অরুণ উদয়,
	তাই জবা ফেলে দিয়ে মেলিয়াছি তাই হৃদয়ের শতদল।।

বাণী

দ্বৈত	:	আবার শ্রাবণ এলো ফিরে তেমনি ময়ুর ডাকে,
		দোলনা কেন বাঁধলে না গো এবার কদম-শাখে।।
স্ত্রী	:	সঙ্গে ল'য়ে গোপ-গোপীরে
পুরুষ	:	ব্রজের কিশোর যাবে ফিরে
দ্বৈত	:	লীলা-কিশোর শ্যাম যে লীলা-সাথীর সাথে থাকে।।
দ্বৈত	:	দোলনা বেঁধে রইবো চেয়ে আমরা মেঘের পানে
		আয় ওরে আয়, নির্জন বনকে জাগাই সেই কাজরি গানে গানে।
স্ত্রী	:	বৃষ্টি ধারায় টাপুর টুপুর
পুরুষ	:	শুনব তাহার পায়ের নূপুর
দ্বৈত	:	বিজলিতে তার চপল চাওয়া দেখব মেঘের ফাঁকে।।

বাণী

আজি আকাশ মধুর বাতাস মধুর, মধুর গানের সুর
			আজি ভুবন লাগে মধুর।
পরানের কাছে যেন আসিয়াছে হারানো প্রিয়া সুদূর।।
	একি মাধুরী জড়িত লতায় পাতায়,
	যাহা হেরি তাই পরান মাতায়,
অবনি ভরিয়া ঝরিছে লাবনি মাধুরীতে ভরপুর।।
আগেও ফুটেছে এ গাঁয়ের মাঠে পথপাশে ভাঁটফুল,
এই পথ বেয়ে জলে যেত বধূ পিঠভরা এলোচুল।
	আজ মনে হয় নতুন সকলি
	মধুময় লাগে বিহগ কাকলি
আজি অকারণ নেচে ফেরে মন যেন বনের ময়ূর।।

বাণী

আমার ধ্যানের ছবি আমার হজরত।
ও নাম প্রাণে মিটায় পিয়াসা,
আমার তামান্না আমারি আশা,
আমার গৌরব আমারি ভরসা,
এ দীন গোনাহগার তাঁহারই উম্মত।।
ও নামে রওশন জমীন আসমান,
ও নামে মাখা তামাম জাহান,
ও নামই দরিয়ায় বহায় উজান,
ও নাম ধেয়ায় মরু ও পর্বত।।
আমার নবীর নাম জপে নিশিদিন
ফেরেশ্‌তা আর হুর পরী জিন্‌,
ও নাম জপি আমার ভোমরায়
পাবো কিয়ামতে তাঁহার শাফায়ৎ।।

বাণী

আজি এ বাদল দিনে কত কথা মনে পড়ে।
হারাইয়া গেছে পিয়া এমনি বাদল-ঝড়ে।।
	আমারি এ বুকে থাকি’
	ঘুমাত সে ভীরু পাখি,
জলদ উঠিলে ডাকি’ লুকাত বুকের ’পরে।।
মোর বুকে মুখ রাখি নিবিড় তিমির কাঁদে,
আমার প্রিয়ার মত বাঁধিয়া বাহুর বাঁধে।
	কোথায় কাহার বুকে
	আজি সে ঘুমায় সুখে,
প্রদীপ নিভায়ে কাঁদি একা ঘরে তারি তরে।।