বাণী

প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে
রসের লুকোচুরি খেলা নিত্য আমার তারই সাথে।।
তারে নয়ন দিয়ে খুঁজি যখন
অন্তরে সে লুকায় তখন
অন্তরে তায় ধরতে গেলে লুকায় গিয়ে নয়ন-পাতে।।
ঐ দেখি তার হাসির ঝিলিক আমার ধ্যানের ললাট-মাঝে
ধরতে গেলে দেখি সে নাই কোন্ সুদূরে নূপুর বাজে।
এত কাছে রয় সে তবু পাই না তারে হাতে হাতে।।

বাণী

পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে।
মন হয়েছে উতলা গো তোমার আসার পথ চেয়ে।।
	আকাশ জুড়ে আলোর খেলা
	বসুন্ধরায় ফুলের মেলা
রঙিন মেঘের ভাসলো ভেলা তোমারই আসার আভাস পেয়ে।।
সাধ জাগে ঐ পথে তোমার পেতে রাখি মন প্রাণ
চলতে গিয়ে দলবে তা’রে চরণ ছোঁয়া করিবে দান।
	তোমার ধ্যানে, হে রাজাধিরাজ
	সাজ ভুলেছি ভুলেছি কাজ
আসবে তুমি সেই খুশিতে আছে আমার মন ছেয়ে।।

বাণী

পরজনমে দেখা হবে প্রিয়।
ভুলিও মোরে হেথা ভুলিও।।
এ জনমে যাহা বলা হ’ল না,
আমি বলিব না, তুমিও ব’লো না।
জানাইলে প্রেম করিও ছলনা,
যদি আসি ফিরে, বেদনা দিও।।
হেথায় নিমেষে স্বপন ফুরায়,
রাতের কুসুম প্রাতে ঝ’রে যায়,
ভালো না বাসিতে হৃদয় শুকায়,
বিষ-জ্বালা-ভরা হেথা অমিয়।।
হেথা হিয়া ওঠে বিরহে আকুলি’
মিলনে হারাই দু’দিনেতে ভুলি’,
হৃদয়ে যথায় প্রেম না শুকায়
সেই অমরায় মোরে স্মরিও।।

বাণী

প্রণমি তোমায় বনদেবতা।
শাখে শাখে শুনি তব ফুল-বারতা — দেবতা।।
তোমার ময়ূর তোমার হরিণ
লীলা-সাথী রয় নিশিদিন,
বিলায় ছায়া বাণী-বিহীন —
		তরু ও লতা — দেবতা।।

বাণী

পরজনমে যদি আসি এ ধরায়।
ক্ষণিক বসন্ত যেন না ফুরায়॥
মিলনে নাহি যেন রহে অবসাদ১
ক্ষয় নাহি হয় যেন চৈতালি-চাঁদ,
কণ্ঠ-লগ্ন মোর প্রিয়ার বাহু
খুলিয়া২ না পড়ে যেন, নিশি না পোহায়॥
বাসি নাহি হয় যেন রাতের মালা,
ভরা থাকে যৌবন-রস-পেয়ালা।
জীবনে না রহে যেন মরণ-স্মৃতি
পুরাতন নাহি হয় প্রেম-প্রীতি,
রবে অভিমান রহিবে না বিরহ,
ফিরে যেন আসে প্রিয়া মাগিয়া বিদায়॥

১. মিলনে যেন নাহি আসে অবসাদ, ২. ঢলিয়া

বাণী

প্রদীপ নিভায়ে দাও, উঠিয়াছে চাঁদ।
বাহুর ডোর আছে, মালায় কি সাধ।।
ফুল আনিও না ভবনে
কেশের সুবাস তব ঘনাক মনে,
হৃদয়ের লাগি মোর হৃদয় কাঁদে চন্দন লাগে বিস্বাদ।।
খোলো গুণ্ঠন, ফেলে দাও আভরণ,
হাতে রাখ হাত, তোলো আনত নয়ন।
বাহিরে বহুক বাতাস
বক্ষে লাগুক মোর তব ঘন শ্বাস,
চম্পার ডালে ব’সে মোদেরে দেখে,
কুহু আর পাপিয়ায় করুক বিবাদ।।

১. বাহু-বন্ধন