বাণী

	হে প্রিয় আমারে দিব না ভুলিতে
মোর	স্মৃতি তাই রেখে' যাই শত গীতে।।
	বিষাদিত সন্ধ্যায় শুনিবে দূরে
	বিরহী বাঁশি ঝুরে আমারি সুরে
	আমারি করুণ গাথা গাহিবে কে কোথা
	সজল মেঘ-ঘেরা নিশীথে।।
	গোধূলি-ধূসর ম্লান আকাশে
	হেরিবে আমার মূরতি ভাসে
	তব পদদলিত ফুলের বাসে
	পড়িবে মনে আমারে চকিতে।।

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।

বাণী

হাওয়াতে নেচে’ নেচে’ যায় ঐ তটিনী।
পাহাড়ের পথ-ভোলা কিশোরী নটিনী।।
		তরঙ্গ আঁচল দুলায়ে
		বনভূমির মন ভুলায়ে,
চলেছে চপল পায়ে একাকিনী উদাসিনী।।
এঁকে বেঁকে থম্‌কে গিয়ে,
হরিণীরে চম্‌কে দিয়ে।
ছুটিয়া যায় সুদূরে
আয় আয় বলি, ডাকে কে কুলের বধূরে,
নেচে চলে পথ বেভুল ঘর-ছাড়া বিবাগিনী।।

বাণী

হাসে আকাশে শুকতারা হাসে।
অরুণ-রঞ্জনী-ঊষার পাশে॥
	ওকি ঊষসীর সাথী
	বাসর ঘরে জাগে রাতি,
(ওকি) সখীর মনের কথা জানে আভাসে॥
হাসির ছটায় ওর আঁখি কেন নাচে,
রবির রথের ধ্বনি ওকি শুনিয়াছে।
(ও) কেন দিবা আসিবার আগে
শ্রান্ত বধূর ঘুম ভাঙে,
(ওকি) ধরার সূযমুখী ফুটেছে নভে —
প্রিয়তমে প্রথম দেখার আশে॥

বাণী

হোরির রঙ লাগে আজি গোপিনীর তনু মনে।
অনুরাগে-রাঙা গোরীর বিধু-বদনে॥
ফাগের লালী আনিল কে,
কাজল-কালো চোখে
কামনা-আবির ঝরে রাঙা নয়নে॥
অশোক রঙন ফুলের আভা জাগে ডালিম-ফুলী গালে,
নাচিছে হৃদয় আজি রসিয়ার নাচের তালে।
তাম্বুলীরাঙা ঠোঁটে ফাগুনের ভাষা ফোটে,
(তার) প্রাণের খুশির রং লেগেছে রাঙা বসনে॥

বাণী

হিন্দু আর মুসলিম মোরা দুই সহোদর ভাই।
এক বৃন্তে দু’টি কুসুম এক ভারতে ঠাঁই॥
সৃষ্টি যাঁর মুসলিম রে ভাই হিন্দু সৃষ্টি তাঁরি
মোরা বিবাদ ক’রে খোদার উপর করি যে খোদকারি।
শাস্তি এত আজ আমাদের হীন-দশা এই তাই॥
দুই জাতি ভাই সমান মরে মড়ক এলে দেশে
বন্যাতে দুই ভাইয়ের কুটির সমানে যায় ভেসে।
দুই জনারই মাঠেরে ভাই সমান বৃষ্টি ঝরে —
সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে
চাঁদ সুরুযের আলো কেহ কম-বেশি কি পাই
বাইরে শুধু রঙের তফাৎ ভিতরে ভেদ নাই॥