বাণী

হাওয়াতে নেচে’ নেচে’ যায় ঐ তটিনী।
পাহাড়ের পথ-ভোলা কিশোরী নটিনী।।
		তরঙ্গ আঁচল দুলায়ে
		বনভূমির মন ভুলায়ে,
চলেছে চপল পায়ে একাকিনী উদাসিনী।।
এঁকে বেঁকে থম্‌কে গিয়ে,
হরিণীরে চম্‌কে দিয়ে।
ছুটিয়া যায় সুদূরে
আয় আয় বলি, ডাকে কে কুলের বধূরে,
নেচে চলে পথ বেভুল ঘর-ছাড়া বিবাগিনী।।

বাণী

হে মোর স্বামী, অন্তর্যামী, লহ সকলি আমার।
লহ প্রীতি-প্রেম-পূজা লহ পায়ে গলার হার।।
	হে প্রিয়তম, সকলি লহ;
	মান-অভিমান ব্যথা-বিরহ।
দুঃখের দাহ, সুখের মোহ লহ হে অশ্রু-ধার।।
	যাহা কিছু আপন, দিতে যা বাকি
	যাহা কিছু গোপন, লুকায়ে রাখি
যাহা কিছু প্রিয় অঞ্চলে ঢাকি; লহ হে বঁধূ এবার।।
	তোমায় চাওয়ার পাওয়ার আশা,
	তোমায় না-পাওয়ার ব্যথা-নিরাশা,
তোমারে দিলাম মোর ভালোবাসা বিফলতা হাহাকার।।

বাণী

হে গোবিন্দ রাখ চরণে।
মোরা তব চরণে শরণাগত আশ্রয় দাও আশ্রিত জনে হে॥
	গঙ্গা ঝরে যে শ্রীচরণ বেয়ে
	কেন দুখ পাই সে চরণ চেয়ে
এ ত্রিতাপ জ্বালা হর হে শ্রীহরি, চাহ করুণা সিক্ত নয়নে॥
হরি ভিক্ষা চাহিলে মানুষ নাহি ফিরায়
তোমারি দুয়ারে হাত পাতিল যে, ফিরাবে কি তুমি তায়।
	হরি সব তরী ডুবে যায়
	তোমার চরণ তরী ত’ ডোবে না হায়,
তব চরণ ধরিয়া ডুবে মরি যদি রবে কলঙ্ক নিখিল ভুবনে॥

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।

বাণী

হে বিধাতা! হে বিধাতা! হে বিধাতা!
দুঃখ-শোক-মাঝে, তোমারি পরশ রাজে,
কাঁদায়ে জননী-প্রায়, কোলে কর পুনরায়, শান্তি-দাতা।।
ভুলিয়া যাই হে যবে সুখ-দিনে তোমারে
স্মরণ করায়ে দাও আঘাতের মাঝারে।
দুঃখের মাঝে তাই, হরি হে, তোমারে পাই দুঃখ-ত্রাতা।।
দারা-সুত-পরিজন-রূপে হরি, অনুখন
তোমার আমার মাঝে আড়াল করে সৃজন।
তুমি যবে চাহ মোরে, লও হে তোদের হ’রে
ছিঁড়ে দিয়ে মায়া-ডোর, ক্রোড়ে ধর আপন।
ভক্ত সে প্রহ্লাদ ডাকে যবে ‘নারায়ণ’,
নির্মম হয়ে তার পিতারও হর জীবন।
সব যবে ছেড়ে যায় দেখি তব বুকে হায় আসন পাতা।।

বাণী

হার মানি ননদিনী
মুখর মুখের বাণী শুনি তোর লজ্জাও লাজ সখি ভোলে
			পুলকে প্রাণ মন দোলে দোলে।।
পলকের চাহনিতে কে জানে কেমনে
প্রাণে এলো এত মধু এত লাজ নয়নে
বাহিরে নীরব কথার কুহু অন্তরে মুহুমুহু বোলে বোলে
			মুহু মুহু কুহু কুহু বোলে।।
তোরি মত ছিনু সই বনের কুরঙ্গী
মানি নাই কোনদিন লাজের ভ্রুভঙ্গি।
মধুরা মুখরা ওলো! মিষ্টি মুখের তোর
সব মধু খেয়েছে কি ঠাকুর জামাই চোর?
তব অভিনব বাণী হিল্লোলে
গুন্ঠন আপনি খোলে পুলকে প্রাণ মন দোলে।।

নাটিকাঃ ‘প্রীতি উপহার’