বাণী

মোর ঘনশ্যাম এলে কি আজ কালো মেঘের বেশে।
দূর মথুরার নীল-যমুনা পার হ’য়ে মোর দেশে।।
		এলে কালো মেঘের বেশে।।
	বৃষ্টি ধারায় টাপুর টুপুর
	বাজে তোমার সোনার নূপুর,
বিজলিতে চপল আঁখির চমক বেড়ায় হেসে।।
তোমার তনুর সুগন্ধ পাই, যুঁই কেতকীর ফুলে
ওগো রাজাধিরাজ! ব্রজে আবার এলে কি পথ ভুলে।
	মেঘ-গরজনের ছলে
	ডাকো ‘রাধা রাধা’ বলে
বাদল হাওয়ায় তোমার বাঁশির বেদন আসে ভেসে।।

বাণী

এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে,
ঐ বৈশাখী ঝড় এলো এলো মহীয়ান সুন্দর।
পাংশু মলিন ভীত কাঁপে অম্বর চরাচর থরথর।।
ঘনবন–কুন্তলা বসুমতী সভয়ে করে প্রণতি,
সভয়ে নত চরণে ভীতা বসুমতী।
সাগর তরঙ্গ মাঝে তারি মঞ্জীর যেন বাজে বাজে রে
পায়ে গিরি–নির্ঝর–ঝরঝর ঝরঝর।।
ধূলি–গৈরিক নিশান দোলে ঈশান গগন চুম্বী,
ডম্বরু ঝল্লরী ঝাঁঝর ঝনঝন বাজে
এলো ছন্দ বন্ধন–হারা এলো রে
এলো মরু–সঞ্চর বিজয়ী বীরবর।।

বাণী

ওরে গো-রাখা রাখাল তুই কোথা হতে এলিরে
	আষাঢ় মাসের মেঘের বরণ কেমন ক'রে পেলি রে।।
	কে দিয়েছে আলতা মেখে পা'য়
	চলতে গেলে নূপুর বেজে যায় রে; নূপুর  বেজে' যায়।
তোর	আদুল গায়ে বাঁধা কেন গাঁদা রঙের চেলি রে।।
তোর	ঢলঢলে দুই চোখে যেন নীল শালুকের কুঁড়ি রে
তোরে	দেখে কেন হাসে যত গোপ-কিশোরী রে।
তোর	গলার মালার গন্ধে আমার মন
	গুনগুনিয়ে বেড়ায় রে মৌমাছি যেমন রে;
তুই	ঘর-সংসার ভুলালি কোন মায়াতে ফেলি' রে।।

বাণী

নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া জাহান — জপে তোমারি নাম।
তারায় গাঁথা তস্‌বি ল’য়ে নিশীতে আসমান — জপে তোমারি নাম।।
	ফুলের বনে নিতি গুঞ্জরিয়া
	ভ্রমর বেড়ায় তব নাম জপিয়া,
হাতে ল’য়ে ফুলকুঁড়ির তস্‌বি ফুলের বাগান — জপে তোমারি নাম।।
	সাঁঝ সকালে কোকিল পাপিয়া
	মধুর তব নাম ফেরে গাহিয়া,
ছল ছল সুরে ঝর্নার ধারা নদীর কলতান — জপে তোমারি নাম।।
	বৃষ্টি ধারার তস্‌বি ল’য়ে
	তব নাম জপে মেঘ ব্যাকুল হয়ে,
সাগর-কল্লোল, সমীর-হিল্লোল বাদল ঝড়-তুফান — জপে তোমারি নাম।।

বাণী

(মা) আমার ভবের অভাব লয় হয়েছে শ্যামা-ভাব-সমাধিতে।
শ্যামা রসে যে-মন আছে ডুবে কাজ কিরে তার যশ-খ্যাতিতে।।
	মধু যে পায় শ্যামা-পদে,
	কাজ কিরে তার বিষয়-মদে;
যুক্ত যে মন যোগামায়াতে; ভাবনা কি তার রোগ ব্যাধিতে।।
কাজ কি’রে তার লক্ষ টাকায়, মোক্ষ লক্ষ্মী যাহার ঘরে,
কত রাজার রাজা প্রসাদ মাগে সেই ভিখারীর পায়ে ধরে।
ও মা শান্তিময়ী অন্তরে যার, দুঃখ শোকে ভয় কি রে তার
সে সদানন্দ সদাশিব জীবন্মুক্ত ধরণীতে।।

বাণী

সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির,
বিরাজে রওজা মোবারক যথা মোর প্রিয় নবীজীর।।
	বাতাসে যেখানে বাজে অবিরাম
	তওহিদ বাণী খোদার কালাম, 
জিয়ারতে যথা আসে ফেরেশ্‌তা শত আউলিয়া পীর।।
মা ফাতেমা আর হাসান হোসেন খেলেছেন পথে যার, 
কদমের ধূলি পড়েছে যথায় হাজারো আম্বিয়ার।
	সুরমা করিয়া কবে সেই ধূলি
	মাখিব নয়নে দুই হাতে তুলি',
কবে এ দুনিয়া হ’তে যাবার আগে রে কা'বাতে লুটাব শির।।