বাণী

নাচিছে নটনাথ, শঙ্কর মহাকাল।
লুটাইয়া পড়ে দিবা-রাত্রির বাঘছাল
আলো-ছায়ার বাঘ ছাল।।
ফেনাইয়া ওঠে নীল-কণ্ঠের হলাহল,
ছিঁড়ে পড়ে দামিনী অগ্নি-নাগিনী দল।
দোলে ঈশান-মেঘে ধূর্জটি-জটাজাল।।
বিষম ছন্দে বোলে ডমরু নৃত্য-বেগে,
ললাট-বহ্নি দোলে প্রলয়ানন্দে জেগে।
চরণ-আঘাত লেগে শ্মশানে কঙ্কাল।।
সে নৃত্য-ভঙ্গে গঙ্গা-তরঙ্গে
সঙ্গীত দুলে ওঠে অপরূপ রঙ্গে,
নৃত্য-উছল জলে বাজে জলদ তাল।।
সে নৃত্য-ঘোরে ধ্যান-নিমীলিত ত্রিনয়ন
প্রলয়ের মাঝে হেরে নব সৃজন-স্বপন,
জোছনা-আশিস্ ঝরে উছলিয়া শশী-থাল।।

নাটকঃ ‘আলেয়া’

বাণী

নিশীথ-স্বপন তোর ভু’লে যা নিশি-শেষে।
বাদল-অবসানে আকাশ উঠেছে হেসে।।
চখার পাশে আসে বিরহ-রাতের চখি
আঁধার লুকাল ঐ দূর বনে এলোকেশে।।
শরম-রাঙা গালে জাগিল কুমারী ঊষা,
তরুণ অরুণ ঐ এসো রাঙা বর-বেশে।।

বাণী

নতুন চাঁদের তক্‌বীর শোন্‌ কয় ডেকে ঐ মুয়াজ্জিন —
আসমানে ফের ঈদুজ্জোহার চাঁদ উঠেছে মুসলেমিন।।
এলো স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুজ্জোহার এই সে চাঁদ,
তোরা ভোগের পাত্র ফেল্‌ রে ছুঁড়ে ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
প্রাণের যা তোর প্রিয়তম আজকে সে সব আন্‌,
খোদারই রাহে আজ তাহাদের কর রে কোরবান্‌।
কি হবে ঐ বনের পশু খোদারে দিয়ে,
তোর কাম-ক্রোধাদি মনের পশু জবেহ্‌ কর্‌ নিয়ে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
বিলিয়ে দেওয়ার খুশির শিরনি তশ্‌তরিতে আন,
পর্‌ রে তোরা সবাই ত্যাগের রঙিন পিরহান্‌।
মোদের যা কিছু প্রিয় বিলাব সবে
নবীর উম্মত তবে সকলে কবে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।

বাণী

নন্দ দুলাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ব্রজের গোপাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ওসে হাতের নাড়ু মুখে ফেলে, আড় চোখে চায় হেলে দুলে
যথায় গোপীর ক্ষীর নবনী দইয়ের হাঁড়ি আছে॥
শূন্য দু হাত শূন্যে তুলে দেয় সে করতালি বলে তাই তাই তাই
নন্দ পিতায় কয় ইশারায় নাই ননী নাই
নন্দ ধরতে গেলে যায় পিছিয়ে
মুচকি হেসে যায় এগিয়ে যশোমতীর কাছে রে॥
কহে শিউরে উঠে শিমুল ফুল নাচ রে গোপাল নাচ নাচ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
সারা গায়ে ঘুঙুর বেঁধে নাচে ডুমুর গাছ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
শিমুল গায়ে নাচে সুখে কাঁটা দিয়ে ওঠে ফুল ফোটে মরা গাছে॥
	নাচ ভুলে সে থমকে দাঁড়ায়
	মার চোখে জল দেখতে সে পায় রে
ননী মাখা দু হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে লুকায় বুকের কাছে॥

বাণী

নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া কে এলো মক্কায় আমিনার কোলে
ফাগুন-পূর্ণিমা-নিশীথে যেমন আস্‌মানের কোলে রাঙা চাঁদ দোলে।।
	কে এলো কে এলো গাহে কোয়েলিয়া,
	পাপিয়া বুল্‌বুল্‌ উঠিল মাতিয়া,
গ্রহতারা ঝুঁকে করিছে কুর্নিশ হুরপরী হেসে পড়িছে ঢ’লে।।
	জিন্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
	ফেরেশ্‌তা আম্বিয়া এসেছে ধেঁয়ে
	তাহ্‌রীমা বেঁধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
	দুনিয়া টলমল্‌, খোদার আরশ টলে।।
	এলো রে চির-চাওয়া এলো আখেরি নবী
	সৈয়দে মক্কী মদনী আল্‌-আরবি,
	নাজেল হয়ে সে যে ইয়াকুত-রাঙা ঠোঁটে
	শাহ্‌দতের বাণী আধো আধো বোলে।।

বাণী

	নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই
	নিত্য নূতন রূপে আবার আসবো এই হেথাই।।
	চাঁদনী রাতের বাতায়নে, রইবে চেয়ে উদাস মনে
	বলবো আমি হারাইনি গো, নাই ভাবনা নাই
	আকাশ থেকে তারার চোখে তোমার পানে চাই।।
তুমি	আকুল হয়ে ফিরবে কেঁদে যে বনপথ বেয়ে'
	ঝরা মুকুল হয়ে আমি সে পথ দেব ছেয়ে।
‌	তোমায়ভালোবেসে সাধ মেটেনি স্বামী
	মরেও মরতে পারব না তাই আমি
	দূরে গিয়ে দেখবো তোমায় কাছে যদি পাই।।