বাণী

	নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই
	নিত্য নূতন রূপে আবার আসবো এই হেথাই।।
	চাঁদনী রাতের বাতায়নে, রইবে চেয়ে উদাস মনে
	বলবো আমি হারাইনি গো, নাই ভাবনা নাই
	আকাশ থেকে তারার চোখে তোমার পানে চাই।।
তুমি	আকুল হয়ে ফিরবে কেঁদে যে বনপথ বেয়ে'
	ঝরা মুকুল হয়ে আমি সে পথ দেব ছেয়ে।
‌	তোমায়ভালোবেসে সাধ মেটেনি স্বামী
	মরেও মরতে পারব না তাই আমি
	দূরে গিয়ে দেখবো তোমায় কাছে যদি পাই।।

বাণী

নিশুতি রাতের শশী গো।
ঘুমায় সকলে নিশীথ নিঝুম
হরিল কে নয়নেরই ঘুম,
কার অভিসারে জাগো গগন-পারে —
চাঁদ ভুলানো সে-কোন্ রূপসী।।
লুকায়ে হেরি আমি অভিসার তব
তারকারা হেরে লুকায়ে নীরব,
কপট ঘুম ভেঙে হের হাসিছে সব —
দূর অলকার বাতায়নে বসি’।।

নাটকঃ ‘সাবিত্রী’

বাণী

	নাইয়া! ধীরে চালাও তরণী
	একে ভরা ভাদর তায় বালা মাতোয়ালা মেঘলা রজনী।।
	হায় পারে নেওয়ার ছলে নিলে মাঝ নদীতে
	যৌবন-নদী টলমল নারি রোধিতে
ঐ	ব্যাকুল বাতাস হরি’ নিল লাজ বাস
তায়	চঞ্চল-চিত যে তুমি চাহ বধিতে
	পায়ে ধরি ছাড়, বঁধু আমি পরের ঘরের ঘরণী।।
	তরঙ্গ ঘোর রঙ্গ করে, অঙ্গে লাগে দোল্
	একি এ নেশার ঘোরে তনু মন আঁখি লোল্।
	দুলিছে নদী দুলে বায়ু দুলিছে তরী
	কেমনে থির রাখি মোর চিত উতরোল ।
	ওঠে ডিঙি পান্‌সি ভরি’ বারি কি করি কিশোরী রমণী।।

বাণী

নীরব সন্ধ্যা, নীরব দেবতা খোলো মন্দির দ্বার।
ম্লান হ’ল বেদনায় অঞ্জলি নিশি-গন্ধ্যার।।
	নিভিয়া যায় হায় অঞ্চল-তলে
	নয়নের প্রদীপ নয়নের জলে,
শুকাইল নিরাশায় চন্দন ফুলদল তোমার বরণ ডালার।।
মৌন র’বে আর কতকাল বল পাষাণ-বেদীতে,
কত জনম কত পূজারিণীর আয়ু-দীপ নিভাইতে।
দিনের তপস্যার শেষে সাঁঝ-লগনে
আশার চাঁদ কি গো উঠিবে না গগনে,
আমার শেষ বাণী তোমার চরণে —
নিবেদনের ক্ষণ পাব নাকি আর।।

বাণী

নদীর স্রোতে মালার কুসুম ভাসিয়ে দিলাম, প্রিয়!
আমায় তুমি নিলে না, মোর ফুলের পূঁজা নিও।।
	পথ-চাওয়া মোর দিনগুলিরে
	রেখে গেলাম নদীর তীরে
আবার যদি আস ফিরে- তুলে গলায় দিও।।
নিভে এলো পরান -প্রদীপ পাষাণ-বেদীর তলে,
জ্বালিয়ে তা'রে রাখব কত শুধু চোখের জলে।
	তারা হয়ে দুর আকাশে
	রইব জেগে' তোমার আশে
চাঁদের পানে চেয়ে চেয়ে' আমারে স্মরিও।।

বাণী

নন্দ দুলাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ব্রজের গোপাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ওসে হাতের নাড়ু মুখে ফেলে, আড় চোখে চায় হেলে দুলে
যথায় গোপীর ক্ষীর নবনী দইয়ের হাঁড়ি আছে॥
শূন্য দু হাত শূন্যে তুলে দেয় সে করতালি বলে তাই তাই তাই
নন্দ পিতায় কয় ইশারায় নাই ননী নাই
নন্দ ধরতে গেলে যায় পিছিয়ে
মুচকি হেসে যায় এগিয়ে যশোমতীর কাছে রে॥
কহে শিউরে উঠে শিমুল ফুল নাচ রে গোপাল নাচ নাচ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
সারা গায়ে ঘুঙুর বেঁধে নাচে ডুমুর গাছ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
শিমুল গায়ে নাচে সুখে কাঁটা দিয়ে ওঠে ফুল ফোটে মরা গাছে॥
	নাচ ভুলে সে থমকে দাঁড়ায়
	মার চোখে জল দেখতে সে পায় রে
ননী মাখা দু হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে লুকায় বুকের কাছে॥