বাণী

নাচিছে নটনাথ, শঙ্কর মহাকাল।
লুটাইয়া পড়ে দিবা-রাত্রির বাঘছাল
আলো-ছায়ার বাঘ ছাল।।
ফেনাইয়া ওঠে নীল-কণ্ঠের হলাহল,
ছিঁড়ে পড়ে দামিনী অগ্নি-নাগিনী দল।
দোলে ঈশান-মেঘে ধূর্জটি-জটাজাল।।
বিষম ছন্দে বোলে ডমরু নৃত্য-বেগে,
ললাট-বহ্নি দোলে প্রলয়ানন্দে জেগে।
চরণ-আঘাত লেগে শ্মশানে কঙ্কাল।।
সে নৃত্য-ভঙ্গে গঙ্গা-তরঙ্গে
সঙ্গীত দুলে ওঠে অপরূপ রঙ্গে,
নৃত্য-উছল জলে বাজে জলদ তাল।।
সে নৃত্য-ঘোরে ধ্যান-নিমীলিত ত্রিনয়ন
প্রলয়ের মাঝে হেরে নব সৃজন-স্বপন,
জোছনা-আশিস্ ঝরে উছলিয়া শশী-থাল।।

নাটকঃ ‘আলেয়া’

বাণী

	নাইয়া! ধীরে চালাও তরণী
	একে ভরা ভাদর তায় বালা মাতোয়ালা মেঘলা রজনী।।
	হায় পারে নেওয়ার ছলে নিলে মাঝ নদীতে
	যৌবন-নদী টলমল নারি রোধিতে
ঐ	ব্যাকুল বাতাস হরি’ নিল লাজ বাস
তায়	চঞ্চল-চিত যে তুমি চাহ বধিতে
	পায়ে ধরি ছাড়, বঁধু আমি পরের ঘরের ঘরণী।।
	তরঙ্গ ঘোর রঙ্গ করে, অঙ্গে লাগে দোল্
	একি এ নেশার ঘোরে তনু মন আঁখি লোল্।
	দুলিছে নদী দুলে বায়ু দুলিছে তরী
	কেমনে থির রাখি মোর চিত উতরোল ।
	ওঠে ডিঙি পান্‌সি ভরি’ বারি কি করি কিশোরী রমণী।।

বাণী

নিখিল ঘুমে অচেতন সহসা শুনিনু আজান
শুনি’ সে তকবিরের ধ্বনি আকুল হল মন-প্রাণ
বাহিরে হেরিনু আসি বেহেশতী রৌশনীতে রে
ছেয়েছে জমিন ও আসমান
আনন্দে গাহিয়া ফেরে ফেরেশ্‌তা হুর গেলেমান —
এলো কে, কে এলো ভুলোকে! দুনিয়া দুলিয়া উঠিল পুলকে।।
তাপীর বন্ধু, পাপীর ত্রাতা, ভয়-ভীত পীড়িতের শরণ-দাতা
মুকের ভাষা নিরাশার আশা, ব্যথার শান্তি, সান্ত্বনা শোকে
এলো কে ভোরের আলোকে।।
দরুদ পড় সবে : সাল্লে আলা, মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লে আলা।
কেহ বলে, এলো মোর কম্‌লিওয়ালা — খোদার হাবীব কেহ কয় নিরালা
মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লে আলা।
কেহ বলে, আহমদ নাম মধু ঢালা — মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লে আলা।
মজনুঁরও চেয়ে হল দীওয়ানা সবে, নাচে গায় নামের নেশায় ঝোঁকে।।

বাণী

নামাজী, তোর নামাজ হলো রে ভুল।
মসজিদে তুই রাখিরি সিজ্‌দা, ছাড়ি ইমানের মূল॥
	নামাজে সামিল হয়ে জামাতের,
	আউড়ালি মুখে সুরা কোরানের,
ভাব্‌লি কি তুই পার হয়ে গেলি, পুলসেরাতের পুল॥
আজ মিলন তীর্থে বাঁধ রে কাতার মনের জায়নামাজে,
সেই আরফাতে তোর নুয়ে দে দিল না ফরমানি লাজে,
	ওজু করে ফের তৌবার নীরে,
	তহরিম বাঁধ ভীতু নত শিরে,
বন্দেগী তোর কবুল হবে রে, কিয়ামতে পাবি কূল ॥

বাণী

নীল আকাশের কোলে শুয়ে হেরে শ্রান্ত মেঘের দল,
পল্লবে-ফুলে পূর্ণ হ’লো কি ধরণীর অঞ্চল।।
	দেয়া গরজে না, উপবনে তাই
	বেণী-বন্ধনে কেয়া ফুল নাই,
গুণ্ঠন খুলি’ প্রকৃতি হাসিছে, মেলি’ এলো-কুন্তল।।
সায়র ছেয়েছে শাপ্‌লা শালুকে, ‘নায়রে’ চলেছে বৌ,
বৌ-কথা-কও ডাকে ফুলবনে, ঝরে মমতার মৌ।
	বাজে আনন্দ-বেণু শারদীয়া
	মিলন পিয়াসি ডাকে পিয়া পিয়া,
সৌরভ-মধু ভারে বেদনায় কার প্রেম-শতদল, করে টলমল।।

বাণী

নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল
ফুল নেব না, অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল।।
	ফুল যদি নিই তোমার হাতে
	জল রবে না১ নয়ন পাতে
অশ্রু নিলে ফুটবে না আর প্রেমের মুকুল।।
মালা যখন গাঁথ তখন পাওয়ার সাধ যে জাগে
মোর বিরহে কাঁদ যখন আরও ভালো লাগে।
	পেয়ে তোমায় যদি হারাই
	দূরে দূরে থাকি গো তাই
ফুল ফোটায়ে যায় গো চলে চঞ্চল বুলবুল।।

১. গো