বাণী

দৃষ্টিতে আর হয় না সৃষ্টি আগের মত গোলাপ ফুল।
কথায় সুরে ফুল ফুটাতাম, হয় না এখন আর সে-ভুল।।
	বাসি হাসির মালা নিয়ে
	কি হবে নওরোজে গিয়ে,
চাঁদ না দেখে আঁধার রাতি বাঁধে কি গো এলোচুল।।
	আজো দখিন হাওয়ায় ফাগুন আনে
	বুল্‌বুলি নাই গুলিস্তানে,
দোলে না আর চাঁদকে দেখে’ বনে দোলন-চাঁপার দুল্‌।।
	কী হারালো! নাই কি যেন
	মন হয়েছে এমন কেন,
কোন্ নিদয়ের পরশ লেগে’ হয় না হৃদয় আর ব্যাকুল।।

বাণী

দেখলে তোমায় বাসতে ভালো হয় না কারো ভুল।
রূপ-দীপালি দোদুল দেহ প্রেম ঢুল্ ঢুল্।।
	সোহাগ কথার মায়ার ফাঁদে
	ব্যাকুল হিয়া সদাই কাঁদে,
রই চেয়ে ঐ বদন-চাঁদে চকোর আকুল।।
সুনীল চোখের মায়া দেখি সজল আকাশে,
কাজল-কালো অলক-লতা মেঘেতে ভাসে।
	গোলাপ বনে গেলে সখি
	তোমায় যবে পাশে দেখি,
আমার ভুল হয়ে যায় কোন্‌টি তুমি, কোন্‌টি গোলাপ ফুল।।

বাণী

		দাঁড়ালে দুয়ারে মোর		কে তুমি ভিখারিনী।
		গাহিয়া সজল চোখে		বেলা-শেষের রাগিণী॥
		মিনতি-ভরা আঁখি			ওগো কে তুমি ঝড়ের পাখি
(ওগো)	কি দিয়ে জুড়াই ব্যথা		কেমনে কোথায় রাখি
		কোন্ প্রিয় নামে ডাকি’		মান ভাঙাব মানিনী॥
		বুকে তোমায় রাখতে প্রিয়	চোখে আমার বারি ঝরে,
(ওগো)	চোখে যদি রাখিতে চাই		বুকে উঠে ব্যথা ভ’রে।
		যত দেখি তত হায়,		ওগো পিপাসা বাড়িয়া যায়
		কে তুমি যাদুকরী			স্বপন-মরু-চারিণী॥

বাণী

দীপক-মালা গাঁথ গাঁথ সই।
মাধব আসে পারিজাত কই।।
আনত আঁখি তোলো তোলো গো!
বেদন-জ্বালা ভোলো ভোলো গো!
মান-ভুলানো এলো রাত সই।।
কাজল আঁকো নীল আঁখিতে
চেয়ো না লাজে আঁখি ঢাকিতে,
আসন প্রাণে পাত পাত সই।।

বাণী

দিকে দিকে পুন জ্বলিয়া উঠেছে দীন-ই-ইসলামী লাল মশাল।
ওরে বে-খবর, তুইও ওঠ্‌ জেগে, তুইও তোর প্রাণ-প্রদীপ জ্বাল।।
গাজী মুস্তফা কামালের সাথে জেগেছে তুর্কী সুর্খ-তাজ,
রেজা পহ্‌লবী-সাথে জাগিয়াছে বিরান মুলুক ইরানও আজ
গোলামী বিসরি’ জেগেছে মিসরী, জগলুল-সাথে প্রাণ-মাতাল।।
ভুলি’ গ্লানি লাজ জেগেছে হেজাজ নেজদ্‌ আরবে ইবনে সউদ্‌
আমানুল্লার পরশে জেগেছে কাবুলে নবীন আল-মামুদ,
মরা মরক্কো বাঁচাইয়া আজি বন্দী করিম রীফ্‌-কামাল।।
জাগে ফয়সল্‌ ইরাক আজমে, জাগে নব হারুন-আল্‌-রশীদ,
জাগে বয়তুল মোকাদ্দস্‌ রে; জাগে শাম দেখ্‌ টুটিয়া নিদ
জাগে না কো শুধু হিন্দের দশ কোটি মুসলিম বে-খেয়াল।।
মোরা আস্‌হাব কাহাফের মত হাজারো বছর শুধু ঘুমাই,
আমাদেরি কেহ ছিল বাদশাহ্‌ কোন কালে; তার করি বড়াই,
জাগি যদি মোরা, দুনিয়া আবার কাঁপিবে চরণে টাল্‌মাটাল।।

বাণী

দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়।
কুসুম দোলে পাতার কোলে পুবালি হাওয়ায়।।
অলকা-পরী অলক খু’লে
কাজরি নাচে গগন-কূলে,
বলাকা-মালার ঝুলন ঝুলায়।।
দাদুরি বোলে, ডাহুকী ডাকে
ময়ূরী নাচে তমাল শাখে,
ময়ূর দোলে কদম-তলায়।।
তটিনী দুলে ঢেউয়ের তালে,
নিবিড় আঁধার ঝাউয়ের ডালে,
বেণুর ছায়া ঘনায় মায়া পরান ভোলায়।।