বাণী

দোল ফাগুনের দোল লেগেছে, আমের বোলে দোলন-চাঁপায়।
মৌমাছিরা পলাশ-ফুলের গেলাশ ভ’রে মউ পিয়ে যায়।।
		শ্যামল পাতার কোলে কোলে
		আবির-রাঙা কুসুম দোলে,
দোয়েল শ্যামা লহর তোলে কৃষ্ণচূড়ার ফুলেল শাখায়।।
বন-গোপিনী ফুল ছুঁড়ে ঐ খেলে হোরী দখিন-বায়ে,
হলদে পাখি দোদুল দুলে সোনাল শাখায় আদুল গায়ে।
		ভাঁট-ফুলের ঐ নাট-দেউলে
		রঙিন প্রজাপতি দুলে,
মন ছুটে যায় দূর গোকুলে, বৃন্দাবনে প্রেম যমুনায়।।

বাণী

দৃষ্টিতে আর হয় না সৃষ্টি আগের মত গোলাপ ফুল।
কথায় সুরে ফুল ফুটাতাম, হয় না এখন আর সে-ভুল।।
	বাসি হাসির মালা নিয়ে
	কি হবে নওরোজে গিয়ে,
চাঁদ না দেখে আঁধার রাতি বাঁধে কি গো এলোচুল।।
	আজো দখিন হাওয়ায় ফাগুন আনে
	বুল্‌বুলি নাই গুলিস্তানে,
দোলে না আর চাঁদকে দেখে’ বনে দোলন-চাঁপার দুল্‌।।
	কী হারালো! নাই কি যেন
	মন হয়েছে এমন কেন,
কোন্ নিদয়ের পরশ লেগে’ হয় না হৃদয় আর ব্যাকুল।।

বাণী

দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে এলো বুঝি সমর-সাজে।
তাহারি মেঘ-মৃদঙ্গ গুরু গুরু আষাঢ়-প্রভাতে সহসা বাজে।।
	গহন কৃষ্ণ ঐরাবত-দল
	রবিরে আবরি’ ঘিরিল নভতল,
হানে খরশর বৃষ্টি ধারা জল — পবন-বেগে প্রতি ভবন-মাঝে।।
	বনের এলোকেশ বিজলি-পাশে
	বাঁধিয়া দেব্-সেনা অট্রহাসে।
	শ্যামল গৌড়ের অমল হাসি
	শস্যে-কুসুমে ওঠে প্রকাশি’,
অঙ্গে তাহার আঘাত-রাশি — দেব-আশীর্বাদ হয়ে বিরাজে।।

বাণী

দোপাটি লো, লো করবী, নেই সুরভি রূপ আছে
রঙের পাগল রূপ পিয়াসি সেই ভালো আমার কাছে।।
	গন্ধ ফুলের জলসাতে তোর
	গুণীর সভায় নেইকে আদর
গুল্ম বনে দুল হয়ে তুই, দুলিস একা ফুল গাছে।।
লাজুক মেয়ে পল্লী বধূ জল নিতে যায় একলাটি
করবী নেয় কবরীতে বেণীর শেষে দোপাটি
	গন্ধ ল'য়ে স্নিগ্ধ মিঠে
	আলো ক'রে থাকিস ভিটে,
নেই সুবাস, আছে গায়ে কাঁটা, সেই গরবে মন নাচে।।

বাণী

দিও বর হে মোর স্বামী যবে যাই আনন্দ ধামে
যেন প্রাণ ত্যাজি হে স্বামী শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ নামে॥
ভাসি যেন আমি ভাগীরথী নীরে অথবা প্রয়াগে যমুনার তীরে
অন্তিম সময়ে হেরি আঁখি নীরে যেন মোর রাধা শ্যামে॥
ব্রজগোপালের শুনায়ে নূপুর মরণ আমার করিও মধুর
বাজায়ো বাঁশি দাঁড়ায়ো আসি’ রাধারে লইয়া বামে॥

বাণী

দুঃখ সাগর মন্থন শেষ ভারতলক্ষ্মী আয় মা আয়
কবে সে ডুবিলি অতল পাথারে উঠিলি না আর হায় মা হায়॥
	মন্থনে শুধু উঠে হলাহল
	শিব নাই পান কে করে গরল
অমৃত ভান্ড লয়ে আয় মাগো জ্বলিয়া মরি বিষের জ্বালায়॥
হরিৎ ক্ষেত্রে সোনার শস্যে দুলে না আর তোর আঁচল
শুকায়েছে মাগো মায়ের স্তন্য গাভীর দুগ্ধ নদীর জল।
	চাই না মোক্ষ চাই মা বাঁচিতে
	অক্ষয় আয়ু লয়ে ধরণীতে
চাই প্রাণ চাই ক্ষুধায় অন্ন মুক্ত আলোকে মুক্ত বায়॥