বাণী

দিতে এলে ফুল,হে প্রিয়,কে আজি সমাধিতে মোর?
এতদিনে কি আমারে পড়িল মনে মনচোর।।
জীবনে যারে চাহনি তাহারে ঘুমাইতে দাও।
মরণ-পারে ভেঙো না,ভেঙো না তাহার ঘুম-ঘোর।।
দিতে এসে ফুল কেঁদো না প্রিয় মোর,সমাধি-পাশে
ঝরিল যে ফুল অনাদরে হায়,নয়ন-জলে বাঁচিবে না সে!
সামাধি-পাষাণ নহে গো তোমার সমান কঠোর।।
কত আশা,সাধ মিশে যায় মাটির সনে
মুকুলে ঝরে কত ফুল কীটেরি দহনে।
কেন অসময়ে আসিলে,ফিরে যাও,মোছ আঁখি -লোর।।

বাণী

দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।।
গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে,
তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে।
	বরিষা-শত-নরী
	দুলিছে মরি মরি,
	দুলে বাদল-পরী
		কেতকী-বেণী খোলে।।
নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা,
দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা।
করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা,
দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা।
	উমারে লয়ে বু’কে
	শিব দুলিছে সুখে,
	দোলে অপরূপ
		রূপ-লহর তোলে।।

বাণী

দিনগুলি মোর পদ্মেরই দল যায় ভেসে যায় কালের স্রোতে
ওগো সুদূর ওগো বিধুর তোমার সাগর-তীর্থ -পথে।।
	বিফল দিনের কমলগুলি
	পড়লো ঝ'রে পাপড়ি খুলি'
নিও প্রিয় তদের তুলি দিন শেষের ম্লান আলোতে।।
সঞ্চিত মোর দিনগুলি হায় ছড়িয়ে গেল অযতনে;
তোমার বরণ-মালা গাঁথা হলো না আর এ জীবনে।
	অন্য মনে কখন বেভুল
	ভাসিয়ে দিলাম দলি সে ফুল
বঞ্চিত তাই হবে কি হায় তোমার চরণ-ছোওয়া হ'তে।।

বাণী

দেখে যারে দুল্‌হা সাজে সেজেছেন মোদের নবী।
বর্ণিতে সে রূপ মধুর হার মানে নিখিল কবি॥
আওলিয়া আর আম্বিয়া সব পিছে চলে বরাতি,
আসমানে যায় মশাল জ্বেলে গ্রহ তারা চাঁদ রবি॥
হুর পরী সব গায় নাচে আজ, দেয় ‘মোবারকবাদ্’ আলম্,
আর্‌শ কুর্শি ঝুঁকে পড়ে দেখতে সে মোহন ছবি॥
আজ আরশের বাসর ঘরে হবে মোবারক রুয়ৎ,
বুকে খোদার ইশ্ক নিয়ে নওশা ঐ আল-আরবি॥

বাণী

দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি।
কে যেন কহিছে কেঁদে মোর বুকে মুখ রাখি’
	‘পথিক এসেছ না কি’।।
হারায়ে গিয়াছে চাঁদ জল-ভরা কালো মেঘে
আঁচলে লুকায়ে ফুল বাতায়নে আছি জেগে’
শূন্য গগনে দেয়া কহিতেছে যেন ডাকি’
	‘পথিক এসেছ না কি’।।
ভাঙিয়া দুয়ার মম কাড়িয়া লইতে মোরে
এলে কি ভিখারি ওগো প্রলয়ের রূপ ধ’রে?
ফুরাইয়া যায় বঁধু শুভ-লগনের বেলা
আনো আনো ত্বরা করি’ ওপারে যাবার ভেলা
‘পিয়া পিয়া’ ব’লে বনে ঝুরিছে পাপিয়া পাখি
	‘পথিক এসেছ না কি’।।

বাণী

দুধে আলতায় রঙ যেন তার সোনার অঙ্গ ছেয়ে
		(সে) ভিন্ গেরামের মেয়ে।
চাঁদের কথা যায় ভুলে লোক তাহার মুখে চেয়ে,
		ভিন্ গেরামের মেয়ে।
ও পারে ওই চরে যখন চুল খুলে সে দাঁড়ায়,
কালো মেঘের ভিড় লেগে যায় আকাশের ওই পাড়ায়,
পা ছুঁতে তার নদীর জলে (ও ভাই) জোয়ার আসে ধেয়ে।।
চোখ তুলে সে মেঘের পানে ভুরু যখন হানে,
অম্‌নি ওঠে রামধনু গো সেই চাহনির টানে।
কপালের সে ঘাম মুছে গো আঁচল যখন খুলে,
ধানের ক্ষেতে ঢেউ খেলে যায়, দরিয়া ওঠে দুলে।
আমি চোখের জলে খুঁজি তারেই (ও ভাই) দুখের তরী বেয়ে।।