বাণী

বনে মোর ফুল-ঝরার বেলা, জাগিল একি চঞ্চলতা।(অবেলায়)
এলো ঐ শুকনো ডালে ডালে কোন অতিথির ফুল-বারতা।।(এলো ঐ)
বিদায়-নেওয়া কুহু সহসা এলো ফিরে,
জোয়ার ওঠে দুলে, মরা নদীর তীরে,
শীতের বনে বহে দখিনা হাওয়া ধীরে
			জাগায়ে বিধুর মধুর ব্যথা।।(পরানে)
রুদ্ধ বাতায়ন খুলে দে, চেয়ে দেখি
হেনার মঞ্জরি আবার ফুটেছে কী?
হারানো মানসী ফিরেছে লয়ে কি
			গত বসন্তের বিহ্বলতা।।(পরানে)

বাণী

বনে বনে দোলা লাগে।
মনে মনে দোলা লাগে
	দখিনা-সমীর জাগে।।
একি এ বেদনা লয়ে
ফুটিল কুসুম হৃদয়ে
আবেশে পুলকে ভয়ে
	না-জানা পরশ মাগে।।
কিশোর হৃদয় পুটে
অশোক রঙিন ফোটে
কপোল রাঙিয়া ওঠে
	অতনুর অনুরাগে।।

বাণী

বৈকালী সুরে গাও চৈতালি গান, বসন্ত হয় অবসান।
নহবতে বাজে সকরুণ মূলতান।।
নীরব আনমনা পিক চেয়ে আছে দূরে অনিমিখ
ধূলি-ধূসর হলো দিক আসে বৈশাখ অভিযান।।
চম্পা-মালা রবমলিন লুটায় ফুল-ঝরা বন-বীথিকায়,
ঢেলে দাও সঞ্চিত প্রাণের মধু-যৌবন দেবতার পায়।
অনন্ত বিরহ-ব্যথায় ক্ষণিকের মিলন হেথায়
ফিরে নাহি আসে যাহা যায়-নিমেষের মধুতর গান।।

বাণী

বকুল চাঁপার বনে কে মোর চাঁদের স্বপন জাগালে —
অনুরাগের সোনার রঙে হৃদয়-গগন রাঙালে।।
ঘুমিয়ে ছিলাম কুমুদ-কুঁড়ি বিজন ঝিলের নীল জলে
পূর্ণ শশী তুমি আসি’ আমার সে ঘুম ভাঙালে।।
হে মায়াবী তোমার ছোঁয়ায় সুন্দর আজ আমার তনু
তোমার মায়া রচিল মোর বাদল মেঘে ইন্দ্র ধনু।
		তোমার টানে হে দরদি
		দোল খেয়ে যায় কাঁদন-নদী
কূল হারা মোর ভালোবাসা আজকে কূলে লাগালে।।

বাণী

বকুল বনের পাখি ডাকিয়া আর ভেঙ্গো না ঘুম
বকুল বাগানে মম, ফুরায়েছে ফুলের মরশুম॥
ওগো, প্রিয় মোর দূর বিদেশে কারে আর ডাকিছ পাখি
খুলিয়া পড়িছে হাতের, মলিন মালতী রাখি।
নিভিয়া গিয়াছে প্রদীপ রেখে গেছে স্মৃতির ধূম॥
ষোড়শী বাসন্তিকার রঙ দেহে মোর হয়েছে ম্লান।
খেলার সাথী পরদেশে, কারে দিই এ প্রীতির কুম্‌কুম্‌॥

বাণী

বিশ্ব ব্যাপিয়া আছ তুমি জেনে শান্তি ত’ নাহি পাই।
রূপ ধরে এসো, দাঁড়াও সুমুখে, দেখিয়া আঁখি জুড়াই॥
	আমার মাঝারে যদি তুমি রহ
	কেন তবে এই অসীম বিরহ
কেন বুকে বাজে নিবিড় বেদনা মনে হয় তুমি নাই॥
চাঁদের আলোকে ভরে না গো মন, দেখিতে চাই যে চাঁদ,
ফুলর গন্ধ পাইলে, জাগে যে ফুল দেখিবার সাধ।
	(ওগো) সুন্দর, যদি নাহি দেবে ধরা
	কেন প্রেম দিলে বেদনায় ভরা
রূপের লাগিয়া কেন প্রাণ কাঁদে রূপ যদি তব নাই॥