বঁধু মিটিলনা সাধ ভালবাসিয়া
বাণী
বঁধু মিটিলনা সাধ ভালোবাসিয়া তোমায়। তাই আবার বাসিতে ভালো আসিব ধরায়।। আবার বিরহে তব কাঁদিব আবার প্রণয়–ডোরে বাঁধিব, শুধু নিমেষেরি তরে আঁখি দুটি ভ’রে — তোমারে হেরিয়া ঝ’রে যাব অবেলায়।। যে গোধূলি–লগ্নে নববধূ হয় নারী, সেই গোধূলি–লগ্নে বঁধু দিল আমারে গেরুয়া শাড়ি। বঁধু আমার বিরহ তব গানে সুর হয়ে কাঁদে প্রাণে প্রাণে, আমি নিজে নাহি ধরা দিয়ে — সকলের প্রেম নিয়ে দিনু তব পায়।।
বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ
বাণী
বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ বন্ধনে কাঁদিছে শ্যাম রাই। মিলনের মাঝে এত বেদনা যে বাজে গো – দেখি নাই, শুনি নাই।। সাগরে মিশে নদী, তবু কাঁদে নিরবধি, বুঝি না কেন গো – বুকে যত পায়, তত তৃষ্ণা বেড়ে যায়, সাধ মেটে না যেন গো।। সাধ কি মেটে গো চাঁদকে হেরে চকোরিণীর সাধ কি মেটে গো – মেঘ দেখে চাতকিনীর সাধ কি মেটে গো। হের, নব নাগরি নব নাগর মাতিল প্রেম-রসে, নব প্রভাত-কমলে যেন বন ভ্রমর বসে। নব সোনার শতদলে যেন নব মেঘের ছায়া কনকমালা ঘিরিল যেন বন নীল গিরি কায়া। গিরিধারীরে ধরিল, ধিরিধিরি রাধা গিরিধারীরে ধরিল।। আধ অধরে ধরে নাক’ হাসি, আধ-অধরে বাঁশি, হেরি’ আধ অঙ্গ দাস হতে চায়, আধ অঙ্গ দাসী; শ্রীচরণ ঘিরিয়া মন মধুকর গাহে, চরণাম্বুজ-রজ মাধুকরী চাহে।। বলে, ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও – ওই চরণ কমল-মধু ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও, ঐ যুগল-রূপ রাধা-শ্যাম দেখি যেন অবিরাম (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও) আমি আনন্দ-যমুনা হয়ে, চরণ ধুয়ে যাব বয়ে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও) আমি নিত্য হৃদি-ব্রজধামে হেরিব মোর রাধা-শ্যামে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও)।।
বেতার গীতিচিত্রঃ ‘যুগল মিলন’
বন তমালের শ্যামল ডালে দোলে ঝুলন
বাণী
বন তমালের শ্যামল ডালে দোলে ঝুলন দোলায় যুগল রাধা শ্যাম। কিশোরী পাশে কিশোর হাসে ভাসে আনন্দ সাগরে আজ ব্রজধাম।। তড়িত লতায় যেন জড়িত জলধরে ওগো যুগল রূপ হেরি মুনির মনোহরে পুলকে গগন ছাপিয়া বারি করে বাজে যমুনা তরঙ্গে শ্যাম শ্যাম নাম।। বন ময়ুর নাচে ঘন দেয়ার তালে দোলা লাগে কেতকী কদম ডালে। আকাশে অনুরাগে ইন্দ্রধনু জাগে হেরে ত্রিলোক থির হয়ে রূপ অভিরাম।।
বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
বাণী
বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥ রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥ বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল আমার চরণে তাই নাচন জাগিল — ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥ এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায় জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায় খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥
বল্ নাহি ভয় নাহি ভয়
বাণী
বল্ নাহি ভয় নাহি ভয়! বল্ মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়! তুই নির্ভর কর্ আপনার ‘পর আপন পতাকা কাঁধে তুলে ধর্ ওরে যে যায় যাক্ সে, তুই শুধু বল্ ‘আমার হয়নি লয়’! বল্ ‘আমি আছি’, আমি পুরুষোত্তম, আমি চির-দুর্জয়! বল্ মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়!! যে গেল সে নিজেরে নিঃশেষ করি’ তোদের পাত্র দিয়ে গেল ভরি’! ঐ বন্ধ মৃত্যু পারেনি ক’ তাঁরে পারেনি করিতে লয়! তাই আমাদের মাঝে নিজেরে বিলায়ে সে আজি শান্তিময় বল্ মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়!! ওরে রুদ্র তখনি ক্ষুদ্রেরে গ্রাসে আগেই যবে সে ম’রে থাকে ত্রাসে ওরে আপনার মাঝে বিধাতা জাগিলে বিশ্বে সে নির্ভয় এই ক্ষুদ্র কারায় কভু কি ভয়াল ভৈরব বাঁধা রয়? বল্ মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়!! ওরে আত্ম-অবিশ্বাসী, ভয়ে-ভীত! কেন হেন ঘন অবসাদ চিত বল্ পর-বিশ্বাসে পর-মুখপানে চেয়ে কি স্বাধীন হয়? তুই আত্মাকে চিন্, বল আমি আছি,’ ‘সত্য আমার জয়’! বল্ মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়!!