বাণী

গুল–বাগিচার বুলবুলি আমি রঙিন প্রেমের গাই গজল।
অনুরাগের লাল শারাব মোর আঁখি ঝলে ঝলমল (হায়)।।
	আমার গানের মদির ছোঁয়ায়
	গোলাপ কুঁড়ির ঘুম টুটে যায়,
সে গান শুনে প্রেমে–দীওয়ানা কবির আঁখি ছলছল (হায়)।।
লাল শিরাজীর গেলাস হাতে তন্বী সাকি পড়ে ঢুলে,
আমার গানের মিঠা পানির লহর বহে নহর–কূলে।
ফুটে ওঠে আনারকলি নাচে ভ্রমর রং–পাগল (হায়)।।
	সে সুর শুনে দিশেহারা
	ঝিমায় গগন ঝিমায় তারা,
চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা বনের চোখে১ শিশির জল (হায়)।।

১. বনের পাতায়

বাণী

গভীর রাতে জাগি’ খুঁজি তোমারে।
দূর গগনে প্রিয় তিমির–‘পারে।।
জেগে যবে দেখি বঁধু তুমি নাই কাছে
আঙিনায় ফুটে’ ফুল ঝ’রে পড়ে আছে,
বাণ–বেঁধা পাখি সম আহত এ প্রাণ মম —
লুটায়ে লুটায়ে কাঁদে অন্ধকারে।।
মৌনা নিঝুম ধরা, ঘুমায়েছে সবে,
এসো প্রিয়, এই বেলা বক্ষে নীরবে।
কত কথা কাঁটা হ’য়ে বুকে আছে বিঁধে
কত আভিমান কত জ্বালা এই হৃদে,
দেখে যাও এসো প্রিয় কত সাধ ঝ’রে গেল —
কত আশা ম’রে গেল হাহাকারে।।

১. দেখিবে এসো প্রিয়

বাণী

গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে – কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে।
থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে;
দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে।।
পরি’ ধানি রঙ ঘাঘরি, মেঘ রঙ ওড়না
গাহে গান, দেয় দোল গোপীকা চল-চরণা,
ময়ূর নাচে পেখম খুলি’ বন-ভবনে।।
গুরু গম্ভীর মেঘ-মৃদঙ্গ বাজে আঁধার অশ্রুর তলে,
হেরিছে ব্রজের রসলীলা অরুন লুকায়ে মেঘ-কোলে।
মুঠি মুঠি বৃষ্টির ফুল ছুঁড়ে হাসে
দেব-কুমারীরা হেরে অদূর আকাশে,
জড়াজড়ি করি‌‘ নাচে, তরুলতা উতলা পবনে।।

বাণী

গঙ্গার বালুতটে খেলিছে কিশোর গোরা।
চরণতলে চলে পুলকে বসুন্ধরা।।
	পড়িল কি রে খসি
	ভূতলে রাকা শশী
ঝরিছে অঝোর ধারায় রূপের পাগল-ঝোরা।।
শ্রীমতি ও শ্রীহরি খেলিছে এক অঙ্গে,
দেব-দেবী নর-নারী গাহে স্তব এক সঙ্গে।
	গঙ্গা জোয়ার জাগে
	তাহারি অনুরাগে,
ফিরে এলো কি নদীয়ায় ব্রজের ননী-চোরা।।

বাণী

গভীর নিশীথে ঘুম ভেঙ্গে যায়, কে যেন আমারে ডাকে —
	সে কি তুমি, সে কি তুমি?
কার স্মৃতি বুকে পাষাণের মত ভার হয়ে যেন থাকে —
	সে কি তুমি, সে কি তুমি?
কাহার ক্ষুধিত প্রেম যেন, হায়, ভিক্ষা চাহিয়া কাঁদিয়া বেড়ায়;
কার সকরুণ আঁখি দু’টি যেন রাতের তারার মত
মুখপানে চেয়ে থাকে – সে কি তুমি, সে কি তুমি?
নিশির বাতাস কাহার হুতাশ দীরঘ নিশাস সম
ঝড় তোলে এসে অন্তরে মোর, ওগো দুরন্ত মম।
	সে কি তুমি, সে কি তুমি?
মহাসাগরের ঢেউ–এর মতন, বুকে এসে বাজে কাহার রোদন,
‘পিয়া পিয়া’ নাম জপে অবিরাম বনের পাপিয়া পাখি
আমার চম্পা শাখে – সে কি তুমি, সে কি তুমি?

বাণী

গগনে পবনে আজি ছড়িয়ে গেছে রঙ
নিখিল রাঙিল রঙে অপরূপ ঢঙ॥
চিত্তে কে নৃত্যে মাতে দোল লাগানো ছন্দে,
মদির রঙের নেশায় অধীর আনন্দে,
নাচিছে সমীরে পুষ্প, পাগল বসন্ত, বাজে মেঘ মৃদঙ।।
প্রাণের তটে কামোদ নটে সুর বাজিছে সুমধুর —
দুলে অলকানন্দ রাঙা তরঙ্গে
শিখী কুরঙ্গ নাচে রঙিলা ভ্রুভঙ্গে,
বাজিছে বুকে সুর-সারং কাফির সঙ্গ্‌