বাণী

মা-মা-মা-মা-মা-মাগো
এবারের পূজা মাগো দশভূজা বড় দুর্গতিময়।
পড়েছিস এ.বি.সি.ডি? বুঝিস ব্ল্যাক আউট কারে কয়?
ব্ল্যাক আউট মানে যত কালো ছিল বাহির হয়েছে মাগো
যত আলো ছিল যত ভালো ছিল, সকলেরে বলে ভাগো।
ডাইনে বাঁ ধারে ভীষণ আঁধারে হাঁটু কাঁপে আর হাঁটি
আমড়ার মত হয়ে আছি মাগো চামড়া এবং আঁটি।
নন্দী ভৃঙ্গী সিঙ্গি যাইলে তাহারাও ভয় পাবে
তাদের দিব্য দৃষ্টি লয়েও মাগো আঁধারে হোঁচট খাবে।
বলি বিগ্রহ তোর কে দেখিতে যাবে মা কুগ্রহের ফেরে
বিড়ি খেয়ে ফেরে গুন্ডারা যদি দেয় মাগো ভুঁড়ি ফেড়ে।
মা তুই বর দেওয়ার আগেই বর্বরেরা এসে
ঠেসে ধরে নিয়ে যাবে চিত্রগুপ্তের দেশে।
চোঁয়া ঢেকুর ওঠে মা মেকুর ডাকিলে কেঁদে উঠি ওঙা ওঙা;
ঢেঁকির আওয়াজ শুনলে মাগো ভয়ে খাড়া হয়ে ওঠে রোঁয়া।
সত্য পথে মা চলিতে পারি না পথে কাদা রাখে ফেলে
উচিত কথা মাগো বলিতে পারি না চিৎ করে দেয় ফেলে।
এ চিতে শক্তি দে মা চিৎ করবো ভয়কে
বলবো এবার তোরে খাব দে মা মাগো মা।।

নাট্য-গ্রন্থঃ ‘ব্লাক আউট’
ব্ল্যাক আউট নাট্যগ্রন্থের এই পাঠকে, আদি রেকর্ডের (এন. ২৭২০৬) পাঠের তুলনায়, স্বতন্ত্র গান হিসাবে বিবেচনা করা যায়।
[অগ্রন্থিত নজরুল, সংকলন ও সম্পাদনাঃ ব্রহ্মমোহন ঠাকুর, ডি.এম. লাইব্রেরি, কলকাতা, ২০০৩]

বাণী

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি
		খোদা তোমার মেহেরবানী।
শস্য-শ্যামল ফসল-ভরা মাঠের ডালিখানি
		খোদা তোমার মেহেরবানী।।
	তুমি কতই দিলে রতন
	ভাই বেরাদর পুত্র স্বজন
ক্ষুধা পেলেই অন্ন জোগাও মানি চাই না মানি।।
খোদা তোমার হুকুম তরক করি আমি প্রতি পায়
তবু আলো দিয়ে বাতাস দিয়ে বাঁচাও এ বান্দায়।
	শ্রেষ্ঠ নবী দিলে মোরে
	তরিয়ে নিতে রোজ-হাশরে
পথ না ভুলি তাইতো দিলে পাক কোরানের বাণী।।

বাণী

এবার	নবীন-মন্ত্রে হবে জননী তোর উদ্বোধন।
	নিত্যা হয়ে রইবি ঘরে, হবে না তোর বিসর্জন।।
	সকল জাতির পুরুষ-নারীর প্রাণ
	সেই হবে তোর পূজা-বেদী মা তোর পীঠস্থান:
সেথা	শক্তি দিয়ে ভক্তি দিয়ে পাতবে মা তোর সিংহাসন।।
সেথা	রইবে নাকো ছোয়াছুয়ি উচ্চ-নীচের ভেদ,
	সবাই মিলে উচ্চারির মাতৃ-নামের বেদ।
মোরা	এক জননীর সন্তান সব জানি,
	ভাঙব দেয়াল, ভুলব হানাহানি
	দীন-দরিদ্র রইবে না কেউ সমান হবে সর্বজন,
	বিশ্ব হবে মহাভারত, নিত্য-প্রেমের বৃন্দাবন।।

বাণী

এলো শারদশ্রী কাশ-কুসুম-বসনা রসলোক-বাসিনী
ল’য়ে ভাদরের নদী সম রূপের ঢেউ মৃদু মধু-হাসিনী।।
	যেন কৃশাঙ্গী তপতী তপস্যা শেষে
	সুন্দর বর পেয়ে হাসে প্রেমাবেশে,
আমন ধানের শিষে মন ভোলানো কোন্ কথা কয় সে মঞ্জুল-ভাষিণী।।
শিশির স্নিগ্ধ চাঁদের কিরণ ওকি উত্তরী তার,
অরণ্য কুন্তলে খদ্যোত মণিকা মালতীর হার।
	তার আননের আবছায়া শতদলে দোলে
	হংসধ্বনিতে মায়া মঞ্জীর বোলে,
সে আনন্দ এনে কেঁদে চলে যায় বিজয়ায় বেদনার বেদমতী সন্ন্যাসিনী।।

গীতি আলেখ্য : ‘শারদশ্রী’

বাণী

এসো চির-জনমের সাথি।
তোমারে খুঁজেছি দূর আকাশে জ্বালায়ে চাঁদের বাতি।।
	খুঁজেছি প্রভাতে গোধূলি-লগনে
	মেঘ হয়ে আমি খুঁজেছি গগনে,
ঢেকেছে ধরণী আমার কাঁদনে অসীম তিমির রাতি।।
ফুল হয়ে আছে লতায় জড়ায়ে মোর অশ্রুর স্মৃতি,
বেণু বনে বাজে বাদল-নিশীথে আমারি করুণ-গীতি।
	শত জনমের মুকুল ঝরায়ে
	ধরা দিতে এলে আজি মধু-বায়ে,
ব’সে আছি আশা-বকুলের ছায়ে বরণের মালা গাঁথি’।।

বাণী

এ কি এ মধু শ্যাম-বিরহে।
হৃদি-বৃন্দাবনে নিতি রসধারা বহে।।
	গভীর বেদনা মাঝে
	শ্যাম-নাম-বীনা বাজে
প্রেমে মন মোহে যত ব্যথায় প্রাণ দহে।।