এসো বঁধূ ফিরে এসো
বাণী
এসো বঁধূ ফিরে এসো, ভোলো ভোলো অভিমান। দিব ও-চরণে ডারি’ মোর তনু মন প্রাণ।। জানি আমি অপরাধী তাই দিবানিশি কাঁদি’, নিমেষের অপরাধের কবে হবে অবসান।। ফিরে গেলে দ্বারে আসি’ বাসি কিনা ভালোবাসি, কাঁদে আজ তব দাসী — তুমি তার হৃদে ধ্যান।। সে-দিন বালিকা-বধূ শরমে মরম-মধু পি’য়াতে পারিনি বঁধূ — আজ এসে কর পান।। ফিরিয়া আসিয়া হেথা দিও দুখ দিও ব্যথা, সহে না এ নীরবতা — হে দেবতা পাষান।।
এই দেহেরই রঙমহলায় খেলিছেন
বাণী
এই দেহেরই রঙমহলায় খেলিছেন লীলা-বিহারী। মিথ্যা মায়া নয় এ কায়া কায়ায় হেরি ছায়া তাঁরি।। রূপের রসিক রূপে রূপে খেলে বেড়ায় চুপে চুপে, মনের বনে বাজায় বাঁশি মন-উদাসী বন-চারী।। তার খেলা-ঘর তোর এ দেহ সে ত নহে অন্য কেহ সে যে রে তুই, — তবু মোহ ঘুচল না তোর হায় পূজারি।। খুঁজিস্ তারে ঠাকুর-পূজায় উপাসনায় নামাজ রোজায়, চাল কলা আর সিন্নি দিয়ে ধর্বি তারে হায় শিকারি! পালিয়ে বেড়ায় মন-আঙিনায় সে যে শিশু প্রেম-ভিখারি।।
এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো
বাণী
এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো হে রাসবিহারী কালা। মম নয়নের পাতে রাখিয়াছি গেঁথে অশ্রু-যূথীর মালা।। আমি ত্যাজিয়াছি কবে লাজ-মান-কুল বহি’ কলঙ্ক এসেছি গোকুল, আমি ভুলিয়াছি ঘর শ্যাম নটবর কর মোরে গোপবালা।। আমার কাঁদন-যমুনার নদী শ্যাম হে ভাঁটি টানে শুধু বহে নিরবধি, তারে বাঁশরির তানে বহাও উজানে ভোলাও বিরহ-জ্বালা।।
এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে
বাণী
এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে, ঐ বৈশাখী ঝড় এলো এলো মহীয়ান সুন্দর। পাংশু মলিন ভীত কাঁপে অম্বর চরাচর থরথর।। ঘনবন–কুন্তলা বসুমতী সভয়ে করে প্রণতি, সভয়ে নত চরণে ভীতা বসুমতী। সাগর তরঙ্গ মাঝে তারি মঞ্জীর যেন বাজে বাজে রে পায়ে গিরি–নির্ঝর–ঝরঝর ঝরঝর।। ধূলি–গৈরিক নিশান দোলে ঈশান গগন চুম্বী, ডম্বরু ঝল্লরী ঝাঁঝর ঝনঝন বাজে এলো ছন্দ বন্ধন–হারা এলো রে এলো মরু–সঞ্চর বিজয়ী বীরবর।।
এই শিকল পরা ছল
বাণী
এই শিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল।। তোদের বন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়, ওরে ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন–ভয়। এই বাঁধন প’রেই বাঁধন–ভয়কে কর্ব মোরা জয়, এই শিকল– বাঁধা পা নয় এ শিকল ভাঙা কল।। তোমার বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে কর্ছ বিশ্ব গ্রাস, আর ভয় দেখিয়েই ক’র্বে ভাবছ বিধির শক্তি হ্রাস সেই ভয় দেখানো ভূতের মোরা ক’র্বো সর্বনাশ, এবার আন্বো মাভৈঃ বিজয়–মন্ত্র বল–হীনের বল।। তোমরা ভয় দেখিয়ে কর্ছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়; সেই ভয়ের টুঁটি ধর্ব টিপে কর্ব তারে লয়। মোরা আপনি ম’রে মরার দেশে আন্ব বরাভয়, প’রে ফাঁসি আন্ব হাসি মৃত্যু–জয়ের ফল।। ওরে ক্রন্দন নয় বন্ধন এই শিকল–ঝঞ্ঝনা, এ যে মুক্তি–পথের অগ্রদূতের চরণ–বন্দনা! এই লাঞ্ছিতেরাই অত্যাচারকে হান্ছে লাঞ্ছনা, মোদের অশ্রু দিয়েই জ্ব’লবে দেশে আবার বজ্রানল।।