অমন করে হাসিস্নে আর রাই লো
বাণী
অমন করে হাসিস্নে আর রাই লো। তুই পোড়ার মুখে হাসিস্নে আর রাই লো।। ছি ছি রঙ্গ করিস অঙ্গে মেখে কৃষ্ণ কালির ছাই লো।। বাঁশি হাতে গাছে চড়া, কয়লা-বরণ গয়লা ছোঁড়া সে লো সেই নাটের গুরু নষ্টের গোড়া তোর প্রেমের গোঁসাই লো।। ঐ গো-রাখা রাখালের সনে তোর নিন্দা শুনি বৃন্দাবনে রাই লো ছি ছি কেষ্ট ছাড়া ইষ্ট কি আর ত্রিভুবনে নাই লো।। ঐ অমাবস্যার কৃষ্ণ-চাঁদে, বাস্লি ভালো কোন্ সুবাদে তুই লো তুই দিন-কানা হয়েছিস রাধে ভাবিয়া কানাই লো।।
অ-মা! তোমার বাবার নাকে
বাণী
অ-মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং? খাঁদা নাকে নাচ্ছে ন্যাদা-নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! ওঁর নাক্টাকে কে করল খ্যাঁদা র্যাঁদা বুলিয়ে? চাম্চিকে-ছা ব’সে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে! বুড়ো গুরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! ওঁর খ্যাঁদা নাকের ছেঁদা দিয়ে টুকিকে দেয় ‘টু’! ছোড়্দি’ বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক্! থুঃ কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দাদু বুঝি চীনাম্যান মা, নাম বুঝি চ্যাংচু? তাই বুঝি ওঁর মুখ্টা অমন চ্যাপ্টা সুধাংশু! জাপান দেশের নোটিশ উনি নাকে এঁটেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়-নাক, ঘুম দিলে ঐ চ্যাপ্টা নাকেই বাজ্তো সাতটা শাঁখ, দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাব্ড়া করেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চ’লতে বেঁজির ছা, দাড়ির জালে প’ড়ে যাদুর আটকে গেছে গা, বিল্লি-বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙতে ‘আল্মানক্’ গজাল ঠুঁকে দেছেন ভেঙে বাঁকা নাকের কাঁখ? মুচি এসে দাদুর আমার নাক ক’রেছে ‘ট্যান’! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে, সেথায় নিয়ে চল দাদু দেখন-হাসিকে। সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান, খাঁদু-দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
‘খাঁদু-দাদু’
[সঞ্চিতা, কাজী নজরুল ইসলাম, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা, ২০০৫]
অনেক কথা বলার মাঝে লুকিয়ে আছে
বাণী
অনেক কথা বলার মাঝে লুকিয়ে আছে একটি কথা। বলতে নারি সেই কথাটি তাই এ মুখর ব্যাকুলতা।। সেই কথাটি ঢাকার ছলে অনেক কথা যাই গো ব’লে ভাসি আমি নয়ন-জলে বলতে গিয়ে সেই বারতা।। অবকাশ দেবে কবে কবে সাহস পাবে প্রাণে লজ্জা ভুলে সেই কথাটি বলব তোমায় কানে কানে। মনের বনে অনুরাগে কত কথার মুকুল লাগে সেই মুকুলের বুকে জাগাও ফুটে ওঠার ব্যাকুলতা।।