বাণী

এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো হে রাসবিহারী কালা।
মম নয়নের পাতে রাখিয়াছি গেঁথে অশ্রু-যূথীর মালা।।
	আমি	ত্যাজিয়াছি কবে লাজ-মান-কুল
		বহি’ কলঙ্ক এসেছি গোকুল,
আমি ভুলিয়াছি ঘর শ্যাম নটবর কর মোরে গোপবালা।।
		আমার কাঁদন-যমুনার নদী
	শ্যাম হে ভাঁটি টানে শুধু বহে নিরবধি,
তারে বাঁশরির তানে বহাও উজানে ভোলাও বিরহ-জ্বালা।।

বাণী

এসেছি তব দ্বারে ভক্তি-শূন্য প্রাণে।
করুণাময় প্রভু! কর হে পূর্ণ দানে।।
শক্‌তি বিহীন করে ধরেছি নিশান তব
বহিতে পারি যেন দিও সে-গৌরব,
দিবাকর কর সম ছড়ায়ে অভিনব
অস্তে যাই যেন জীবন-বিহানে।।
সাঁঝের আকাশে পূর্ণিমা চাঁদ সম
রাঙায়ো আঁধার হৃদি-প্রেমের জোছনা বানে।।

বাণী

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি
		খোদা তোমার মেহেরবানী।
শস্য-শ্যামল ফসল-ভরা মাঠের ডালিখানি
		খোদা তোমার মেহেরবানী।।
	তুমি কতই দিলে রতন
	ভাই বেরাদর পুত্র স্বজন
ক্ষুধা পেলেই অন্ন জোগাও মানি চাই না মানি।।
খোদা তোমার হুকুম তরক করি আমি প্রতি পায়
তবু আলো দিয়ে বাতাস দিয়ে বাঁচাও এ বান্দায়।
	শ্রেষ্ঠ নবী দিলে মোরে
	তরিয়ে নিতে রোজ-হাশরে
পথ না ভুলি তাইতো দিলে পাক কোরানের বাণী।।

বাণী

এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল
এ যে ব্যথা রাঙা হৃদয় আঁখি জলে টলমল।।
কমল মৃণাল দেহ ভরেছে কন্টক ঘায়
শরণ লয়েছি গো তাই শীতল দীঘির জল।।
ডুবেছি আজ কালো জলে কত যে জ্বালা স'য়ে
শত ব্যথা ক্ষত লয়ে হইয়াছি শতদল।।
কবি রে কোন ক্ষত মুখে ফোটে যে তোর গীত সুর
সে ক্ষত দেখিল না কেউ দেখিল তোরে কেবল
সে গীতি দেখিল না কেউ শুনিল গীতি কেবল।।

বাণী

এলো বরষা শ্যাম সরসা প্রিয়-দরশা।।
দাদুরি পাপিয়া চাতকী বোলে নব জলধারা-হরষা।।
	নাচে বন-কুন্তলা যামিনী উতলা
	খুলে পড়ে গগনে দামিনী মেখলা,
চলে যেতে ঢ’লে পড়ে অভিসারে চপল যৌবন-মদ অলসা।।
	একা কেতকী বনে কেকা কুহরে,
	বহে পূব-হাওয়া কদম্ব শিহরে।
	দুরন্ত ঝড়ে কোন্ অশান্ত চাহি রে
	ঘরে নাহি রহে মন, যেতে চায় বাহিরে,
যত ভয় জাগে তত সুন্দর লাগে শ্রাবণ-ঘন-তমসা।।

বাণী

এসো চির-জনমের সাথি।
তোমারে খুঁজেছি দূর আকাশে জ্বালায়ে চাঁদের বাতি।।
	খুঁজেছি প্রভাতে গোধূলি-লগনে
	মেঘ হয়ে আমি খুঁজেছি গগনে,
ঢেকেছে ধরণী আমার কাঁদনে অসীম তিমির রাতি।।
ফুল হয়ে আছে লতায় জড়ায়ে মোর অশ্রুর স্মৃতি,
বেণু বনে বাজে বাদল-নিশীথে আমারি করুণ-গীতি।
	শত জনমের মুকুল ঝরায়ে
	ধরা দিতে এলে আজি মধু-বায়ে,
ব’সে আছি আশা-বকুলের ছায়ে বরণের মালা গাঁথি’।।