বাণী

এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা কর দীপান্বিতা আঁধার অবনি মা।
ব্যাপিয়া চরাচর শারদ অম্বর ছড়াও অভয় হাসির লাবনি মা।।
	সারাটি বরষ নিখিল ব্যথিত
	চাহিয়া আছে মা তব আসা-পথ,
ধরার সন্তানে ধর তব কোলে ভুলাও দুঃখ-শোক চির-করুণাময়ী মা।।
	অটুট স্বাস্থ্য দীর্ঘ পরমায়ু
	দাও আরো আলো নির্মল বায়ু,
দশ হাতে তব আনো মা কল্যাণ পীড়িত-চিত গাহে অকাল জাগরণী মা।।

বাণী

এস প্রিয় আরো কাছে
পাইতে হৃদয়ে এ বিরহী মন যাচে।।
দেখাও প্রিয় ঘন
ও রূপ মোহন
যে রূপে প্রেমাবেশে পরান নাচে।।

বাণী

একাকিনী বিরহিণী জাগি আধো রাতে।
বঁধু নাহি পাশে, নিদ নাহি আসে,
কণ্টক ফোটে হায় ফুল-বিছানায়।
আবার ফুটিবে ফুল উঠিবে চাঁদ,
আমারি মনের হায় মিটিল না সাধ,
যামিনীর ফুল যেন এ রূপ-যৌবন
নিশীথে ফুটিয়া লাজে ঝ’রে যায় প্রাতে।।

নাটক : ‘দেবী দুর্গা’

বাণী

এ ঘোর শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে।
রহি’ রহি’ সেই মুখ পড়িছে মনে।।
	বিজলিতে সেই আঁখি
	চমকিছে থাকি’ থাকি’
শিহরিত এমনি সে বাহু-বাঁধনে।।
শন শন বহে বায় সে কোথায় সে কোথায়
নাহি নাহি ধ্বনি শুনি উতল পবনে হায়
চরাচর দুলিছে অসীম রোদনে।।

বাণী

মা-মা-মা-মা-মা-মাগো
এবারের পূজা মাগো দশভূজা বড় দুর্গতিময়।
পড়েছিস এ.বি.সি.ডি? বুঝিস ব্ল্যাক আউট কারে কয়?
ব্ল্যাক আউট মানে যত কালো ছিল বাহির হয়েছে মাগো
যত আলো ছিল যত ভালো ছিল, সকলেরে বলে ভাগো।
ডাইনে বাঁ ধারে ভীষণ আঁধারে হাঁটু কাঁপে আর হাঁটি
আমড়ার মত হয়ে আছি মাগো চামড়া এবং আঁটি।
নন্দী ভৃঙ্গী সিঙ্গি যাইলে তাহারাও ভয় পাবে
তাদের দিব্য দৃষ্টি লয়েও মাগো আঁধারে হোঁচট খাবে।
বলি বিগ্রহ তোর কে দেখিতে যাবে মা কুগ্রহের ফেরে
বিড়ি খেয়ে ফেরে গুন্ডারা যদি দেয় মাগো ভুঁড়ি ফেড়ে।
মা তুই বর দেওয়ার আগেই বর্বরেরা এসে
ঠেসে ধরে নিয়ে যাবে চিত্রগুপ্তের দেশে।
চোঁয়া ঢেকুর ওঠে মা মেকুর ডাকিলে কেঁদে উঠি ওঙা ওঙা;
ঢেঁকির আওয়াজ শুনলে মাগো ভয়ে খাড়া হয়ে ওঠে রোঁয়া।
সত্য পথে মা চলিতে পারি না পথে কাদা রাখে ফেলে
উচিত কথা মাগো বলিতে পারি না চিৎ করে দেয় ফেলে।
এ চিতে শক্তি দে মা চিৎ করবো ভয়কে
বলবো এবার তোরে খাব দে মা মাগো মা।।

নাট্য-গ্রন্থঃ ‘ব্লাক আউট’
ব্ল্যাক আউট নাট্যগ্রন্থের এই পাঠকে, আদি রেকর্ডের (এন. ২৭২০৬) পাঠের তুলনায়, স্বতন্ত্র গান হিসাবে বিবেচনা করা যায়।
[অগ্রন্থিত নজরুল, সংকলন ও সম্পাদনাঃ ব্রহ্মমোহন ঠাকুর, ডি.এম. লাইব্রেরি, কলকাতা, ২০০৩]

বাণী

এসো বঁধু ফিরে এসো, ভোলো ভোলো অভিমান।
দিব ও-চরণে ডারি’ মোর তনু মন প্রাণ।।
	জানি আমি অপরাধী
	তাই দিবানিশি কাঁদি’,
নিমেষের অপরাধের কবে হবে অবসান।।
	ফিরে গেলে দ্বারে আসি’
	বাসি কিনা ভালোবাসি,
কাঁদে আজ তব দাসী — তুমি তার হৃদে ধ্যান।।
	সে-দিন বালিকা-বধূ
	শরমে মরম-মধু,
পি’য়াতে পারিনি বঁধু — আজ এসে কর পান।।
	ফিরিয়া আসিয়া হেথা
	দিও দুখ দিও ব্যথা,
সহে না এ নীরবতা — হে দেবতা পাষাণ।।