বাণী

বাসন্তী রং শাড়ি প’রো খয়ের রঙের টিপ্‌।
সাঁঝের বেলায় সাজবে যখন জ্বাল্‌বে যখন দীপ্॥
	দুলিয়ে দিও দোলন্ খোঁপায়
	আমের মুকুল বকুল চাঁপায়,
মেখ্‌লা ক’রো কটি-তটে শিউরে-ওঠা নীপ্॥
কর্ণ-মূলে দুল দুলিও দুলাল চাঁপার কুঁড়ি,
বন্-অতসীর কাঁকন প’রো, কনক-গাঁদার চুড়ি।
	আধখানা চাঁদ গরব ভরে
	হাসে হাসুক আকাশ ’পরে,
তুমি বাকি আধখানা চাঁদ ধরার মণি-দীপ্॥

বাণী

	বল দেখি মা নন্দরানী ওগো গোকুলবালা
(ওমা)	কেমন করে তোদের ঘরে (মা) এলো নন্দলালা।
	(মা তুই) কোন সাধনায় দধি মথন করে
	তুললি ননী হৃদয় পাত্র ভরে;
	তুই সেই নবনি দিয়ে যতন করে
	(মা তুই) গড়লি কি এই ননীর পুতুল আঁধার চিকনকালা।।
	অমন রসবিগ্রহ মা গড়তে পারে কে?
	গোপঝিয়ারি গড়তে পারে কে?
	গোকুল মেয়ে নস্ তুই মা তুই কুমারের ঝি।
	(মাগো) তুই নস্ যোগিনী তবু স্বগুণ বলে
	(মা তুই) শ্রীকৃষ্ণে বাঁধলি উদূখলে
	(আমায়) সেই যোগ তুই শিখিয়ে দে মা বসেই জপমালা।।

বাণী

বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।

বাণী

বিদেশিনী বিদেশিনী চিনি চিনি
ঐ চরণের নূপুর রিনিঝিনি॥
দীপ জেগে ওঠে পাথার জলে তোমার চরণ-ছন্দে,
নাচে গাঙচিল সিন্ধু-কপোত তোমারি সুরে আনন্দে।
মুকুতা কাঁদিছে হার্‌ হ’তে ওগো তোমার বেণীর বন্ধে।
মলয়ে শুনেছি তোমার বলয় চুড়ির রিনিঠিনি॥
সাগর-সলিল হয়েছে সুনীল তোমার তনুর বর্ণে,
তোমার আঁখির আলো ঝলমল দেবদারু তরু-পর্ণে।
অস্ত-তপন হয়েছে রঙিন তোমার হাসির স্বর্ণে
শঙ্খ-ধবল বেলাভূমে খেল সাগর-নটিনী॥

বাণী

বেল ফুল এনে দাও চাই না বকুল
চাই না হেনা, আনো আমের মুকুল।।
গোলাপ বড় গরবী এনে দাও করবী
চাইতে যূথী আন টগর — কি ভুল।।
কি হবে কেয়া, দেয়া নাই গগনে;
আনো সন্ধ্যামালতী গোধূলি-লগনে।
গিরি-মল্লিকা কই’ চামেলি পেয়েছে সই
চাঁপা এনে দাও, নয় বাঁধব না চুল।।

বাণী

বুল্‌বুলি নীরব নার্গিস–বনে।
ঝরা বন–গোলাপের বিলাপ শোনে।।
শিরাজের নওরোজে ফাল্গুন মাসে
যেন তার প্রিয়ার সমাধির পাশে,
তরুণ ইরান–কবি কাঁদে নিরজনে।।
উদাসীন আকাশ থির হ’য়ে আছে,
জল–ভরা মেঘ ল’য়ে বুকের কাছে।
সাকির শরাবের পিয়ালার ‘পরে
সকরুণ অশ্রুর বেল ফুল ঝরে,
চেয়ে আছে ভাঙা চাঁদ মলিন–আননে।।