বাণী

বউ কথা কও, বউ কথা কও, কও কথা অভিমানিনী
সেধে সেধে কেঁদে কেঁদে যাবে কত যামিনী।।
সে কাঁদন শুনি হের নামিল নভে বাদল
এলো পাতার বাতায়নে যুঁই চামেলী কামিনী।।
আমার প্রাণের ভাষা শিখে ডাকে পাখি পিউ কাঁহা
খোঁজে তোমায় মেঘে মেঘে আঁখি মোর সৌদামিনী।।

বাণী

বাজে মৃদঙ্গ বরষার ওই দিকে দিকে দিগন্তরে
নীরস ধরা সরস হলো কাহার যাদু-মন্তরে।।
বন-ময়ুর আনন্দে নাচে ধারা-প্রপাত ছন্দে
ঝরঝর গিরি-নির্ঝর স্রোতে অন্তর সুখে সন্তরে।।
শ্যামল প্রিয়-দরশা হলো ধূসর পথ-প্রান্তর
বন্ধু-মিলন হরষা গাহে দাদুরি অবান্তর।
	শ্রাবন প্লাবন বন্যাতে
	আজি পুষ্পে পল্লবে বন মাতে
এলো শ্যাম শোভন সুন্দর প্রাণ-চঞ্চল ক'রে মন্থরে।।

বাণী

বঁধু, তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে।
তাই যত কাছে পাই তত এ হিয়ায় কি যেন অভাব রহে।।
	বারে বারে মোরা কত সে ভুবনে আসি
	দেখিয়া নিমেষে দুইজনে ভালোবাসি,
দলিয়া সহসা মিলনের সেই মালা (কেন) চলিয়া গিয়াছি দোঁহে।।
আমরা বুঝি গো বাঁধিব না ঘর, অভিশাপ বিধাতার।
শুধু চেয়ে থাকি, কেঁদে কেঁদে ডাকি, চাঁদ আর পারাবার
		যেন চাঁদ আর পারাবার।
	মোদের জীবন-মঞ্জরি দুটি হায়!
	শতবার ফোটে শতবার ঝ'রে যায়;
আমি কাদি ব্রজে (বঁধু), তুমি কাঁদ মথুরায়, মাঝে অপার যমুনা বহে।।

বাণী

বরের বেশে আসবে জানি আজ মম সুন্দর।
পার হ’য়ে দূর বিরহ-লোক বহু যুগের পর।।
	আসে সে ঐ চুপে চুপে
	আমার মধুর মরণ রূপে
আর সে ছেড়ে যাবে না গো আমার-ঘর।।

নাটকঃ ‘লায়লী-মজনু’

বাণী

বৈকালী সুরে গাও চৈতালি গান, বসন্ত হয় অবসান।
নহবতে বাজে সকরুণ মূলতান।।
নীরব আনমনা পিক চেয়ে আছে দূরে অনিমিখ
ধূলি-ধূসর হলো দিক আসে বৈশাখ অভিযান।।
চম্পা-মালা রবমলিন লুটায় ফুল-ঝরা বন-বীথিকায়,
ঢেলে দাও সঞ্চিত প্রাণের মধু-যৌবন দেবতার পায়।
অনন্ত বিরহ-ব্যথায় ক্ষণিকের মিলন হেথায়
ফিরে নাহি আসে যাহা যায়-নিমেষের মধুতর গান।।

বাণী

বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥
	রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে
	আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে
সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥
	বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল
	আমার চরণে তাই নাচন জাগিল —
ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥
	এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
	জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥