বাণী

বন-বিহারিণী	চঞ্চল হরিণী
চিনি আঁখিতে,	চিনি কানন
			নটিনী রে।।
ছুটে চলে যেন	বাঁধ ভাঙ্গা
			তটিনী রে।।
নেচে নেচে চলে	ঝর্ণার
			তীরে তীরে
ছায়াবীথি-তলে	কভু ধীরে চলে,
চকিতে পালায়	ছুটি, ছায়া হেরি,
			গিরি-শিরে।।

নাটকঃ‘সাবিত্রী’

বাণী

বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।

বাণী

বরষা ঐ এলো বরষা
আলোর ধারায় জল ঝরঝরি’ অবিরল
ধূসর নীরস ধরা হলো সরসা।।
ঘন দেয়া দমকে দামিনী চমকে
ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর ঝমঝম ঝমকে
মনে পড়ে সুদূর মোর প্রিয়তমকে
মরাল মরালীরে হেরি সহসা।।

বাণী

	বল্ মা শ্যামা বল্ তোর বিগ্রহ কি মায়া জানে।
আমি	যত দেখি তত কাঁদি ঐ রূপ দেখি মা সকলখানে॥
	মাতৃহারা শিশু যেমন মায়ের ছবি দেখে,
	চোখ ফিরাতে নারে মাগো, কাঁদে বুকে রেখে।
তোর	মূর্তি মোরে তেমনি ক’রে টানে মাগো মরণ টানে॥
ও-মা,	রাত্রে নিতুই ঘুমের ঘোরে দেখি বুকের কাছে,
যেন,	প্রতিমা তোর মায়ের মত জড়িয়ে মোরে আছে।
	জেগে উঠে আঁধার ঘরে
	কাঁদি যবে মা তোরই তরে
দেখি	প্রতিমা তোর কাঁদছে যেন চেয়ে চেয়ে আমার পানে॥

বাণী

ব্রজগোপাল শ্যাম সুন্দর
যশোদা দুলাল শিশু নটবর॥
নন্দ নন্দন নয়নানন্দ
চরণে মধুর সৃজন ছন্দ
ভুবন মোহন কৃষ্ণচন্দ্র
অপরূপ রূপ হেরে চরাচর॥
কোটি গ্রহতারা চরণে নূপুর
ওঙ্কার ধ্বনি বাঁশরির সুর।
বঙ্কিম আঁখি বাঁকা শিখীপাখা
বাঁকা শ্রীচরণ ভঙ্গিমা বাঁকা
কৃষ্ণময় শ্রীঅঙ্গ ডাকা
করাল মধুর প্রভু গিরিধর॥

বাণী

বসন্ত মুখর আজি।
দক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনে
বনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি’।।
অকারণ ভাষা তার ঝর ঝর ঝরে
মুহু মুহু কুহু কুহু পিয়া পিয়া স্বরে,
পলাশ বকুলে অশোক শিমুলে —
সাজানো তাহার কল–কথার সাজি।।
দোয়েল মধুপ বন–কপোত কূজনে,
ঘুম ভেঙে দেয় ভোরে বাসর শয়নে।
মৌনী আকাশ সেই বাণী–বিলাসে
অস্ত চাঁদের মুখে মৃদু মৃদু হাসে,
বিরহ–শীর্ণা গিরি–ঝর্ণার তীরে —
পাহাড়ি বেণু হাতে ফেরে সুর ভাঁজি’।।