বাণী

বনমালার ফুল জোগালি বৃথাই বন-লতা
বনের ডালায় কুসুম শুকায়, বনমালি কোথা।।
	শুকনো পাতার গুনে নূপুর
	চমকে ওঠে বনে ময়ূর,
রাস নাই আজ নিরাশ ব্রজে গভীর নীরবতা।।
যমুনা-জল উজান বেয়ে কদম-তলে আসি’
ভাটিতে যায় ফিরে, নাহি শু’নে শ্যামের বাঁশি।
	তমাল-ডালে ঝুলনা আর
	গোপীরা বাঁধেনি এবার,
শ্রাবণ এসে কেঁদে শুধায় ঘনশ্যামের কথা।।

বাণী

বিদেশী তরী এলো কোথা হ’তে
প্রভাত-ঘাটে, আলোর স্রোতে।।
অসীম বিরহ-রাতের শেষে
কে এলো কিশোর-নাইয়ার বেশে,
বাঁশরি বাজায়ে দুয়ারে এসে —
	ডাকে হেসে অকূল-পথে।।
অঙ্গনে এলা শুভ দিনের আলো,
বুঝি মোর নিরাশার শর্বরী গো পোহালো।
আশাবরি সুরে বেণুকা বাজে
চির-চাওয়া এলো অভিসারে-সাজে,
	পূর্বাচলের ঘাটে অরুণ-রথে।।

বাণী

বঁধু	আমি ছিনু বুঝি বৃন্দাবনের রাধিকার আঁখি-জলে।
	বাদল সাঁঝের যুঁই ফুল হয়ে আসিয়াছি ধরাতলে।।
তাই	যেমনি মিলন সাধ ওঠে জেগে
তুমি	লুকাও হে চাঁদ বিরহের মেঘে,
আমি	পূবালী পবনে ঝরে যাই বনে দলগুলি যেই খোলে।।
বঁধু	এই বুঝি হায় নিয়তির লেখা মিলন আমার নহে —
	ক্ষনিকের শুভ-দৃষ্টি লভিয়া কাঁদিব পরম বিরহে।
			বুঝি মিলন আমার নহে —
		আসিব না আমি মাধবী নিশীথে
		বরষায় শুধু আসিব ঝুরিতে,
	অসহায় ধারা-স্রোতে ভেসে যাব, মালা হব নাকো গলে।।

বাণী

বনের হরিণ বনের হরিণ ওরে কপট চোর।
কেমন ক’রে করলি চুরি প্রিয়ার আঁখি মোর।।
	লায়লীরে তুই দেখ্‌লি কখন
	কর্‌লি বদল তোদের নয়ন,
ওরে বন হয়েছে স্বর্গ আমার হেরি নয়ন তোর।।

নাটকঃ ‘লায়লী-মজনু’

বাণী

বন-কুন্তল এলায়ে বন শবরী ঝুরে সকরুণ সুরে।
বিষাদিত ছায়া তার চৈতালী সন্ধ্যার চাঁদের মুকুরে।।
	চপলতা বিসরি যেন বন-যৌবন
	বিরহ-ক্ষীণ আজি উদাস উন্মন,
তোলে না ঝঙ্কার আর ঝরা পাতার মর্মর নূপুরে।।
যে কুহু কুহরিত মধুর পঞ্চমে বিভোর ভাবে,
ভগ্ন কণ্ঠে তার থেমে যায় সুর করুণ রেখাবে।
	কোন বন-শিকারীর অকরুণ তীর
	আলো হ’রে নিল ওই উজল আঁখির —
ফেলে যাওয়া বাঁশি তা’র অঞ্চলে লুকায়ে —
	গিরি–দরি–প্রান্তরে খোঁজে সে নিঠুরে।।

বাণী

বিষ্ণুসহ ভৈরব
অপরূপ মধুর মিলন শম্ভু মাধব।
দক্ষিণে শঙ্কর শ্রীহরি বামে,
মিলিয়াছে যেন রে কানু বলরামে
দেখি এক সাথে যেন দেখি রে
		স্বয়ম্ভু কেশব।।
বিমল চেতনা আনন্দ মদন
শিব-নারায়ণের যুগল মিলন,
এক সাথে ব্রজধাম শিবলোকে
অরূপ স্বরূপ নেহারি চোখে —  
শোন্ রে একসাথে বেণূকার প্রণব।।