বাণী

	গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী।
	দূরে দাঁড়ায়ে দেখে ভয়-ভীতা মেদিনী।।
	দেখায় মেঘের ঝাপি তুলিয়া
	ফনা তুলি’ বিদ্যুৎ-ফণি ওঠে দুলিয়া,
	ঝড়ের তুব্‌ড়িতে বাজে তার অশান্ত রাগিণী।।
	মহাসাগরে লুটায় তার সর্পিল অঞ্চল
	দিগন্তে দুলে তার এলোকেশ পিঙ্গল
	ছিটায় মন্ত্রপূত ধারাজল অবিরল তন্বী-মোহিনী।।
	অশনি-ডমরু ওঠে দমকি’
	পাতালে বাসুকি ওঠে চমকি’
তার 	ডাক শুনে ছুটে আসে নদীজল যেন পাহাড়িয়া নাগিনী।।

বাণী

গ্রহণী-রোগ-সমা গৃহিণী প্রিয়তমা, প্রসীদ! কর ক্ষমা! দেবী নমস্তে।
শতমুখীধারিণী ভীমহুঙ্কারিণী যেন গন্ডারিনী দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে।দেবী নমস্তে।।
চীৎকারে মাঝ রাতে পড়শীরা জেগে যায়
তক্তাপোষের নীচে ছেলে পিলে ভেগে যায়
পদভরে দুদ্দাড় ভেঙ্গে পড়ে ঘর দ্বার
চেড়ীদের সর্দার হাতা-বেড়ী-হস্তে।দেবী নমস্তে।।
শান্ত শিষ্ট এই গোবেচারা স্বামী
তোমার পুলিশ কোর্টে চিরকাল আসামী
তেড়ে আসে বীরজায়া তুমি কুঁদো মোটকা।
বেগতিক দেখে ছুটি আমি রোগা পট্‌কা।
কাঁছাকোঁচা বেসামাল ব্যস্তে সমস্তে।দেবী নমস্তে।।
তুমি পূর্বজন্মে ছিলে ভোজপুরি দারোয়ান
আমি বলীবর্দ তুমি ছিলে গাড়োয়ান;
ময়দা ছিলাম আমি তুমি নিয়ে ঠাসতে।
আহা হা টুটি কেন টিপে ধর? আস্তে, শ্বস্তে।দেবী নমস্তে।।

বাণী

গম্ভীর আরতি নৃত্যের ছন্দে।
হে প্রভু! তোমারে প্রকৃতি বন্দে।।
	চন্দ্র সূর্য কত শত গ্রহ তারা
	তোমারে ঘিরি’ নাচে প্রেমে মাতোয়ারা,
অনন্ত কাল ঘোরে ধূমকেতু উল্কা আগুন জ্বালায়ে বুকে উগ্র আনন্দে
লীলায়িত সিন্ধু অবোধ উল্লাসে,
মেঘ হ’য়ে উড়ে যেতে চায় তব পাশে।
	নব নব সৃষ্টি বৃষ্টিধারার প্রায়
	সেই ছন্দের তালে অবিরাম ঝ’রে যায়,
ধরণীর গোপন অনুরাগ ভক্তি ফুটে ওঠে নীরব পুষ্প-সুগন্ধে।।

১. প্রেম ২. ভাব উল্লাসে

বাণী

গিরিধারী লাল কৃষ্ণ গোপাল যুগে যুগে হ’য়ো প্রিয়
জনমে জনমে বঁধু তব প্রেমে আমারে ঝুরিতে দিও॥
	তুমি চির চঞ্চল চির পলাতকা
	প্রেমে বাঁধা প’ড়ে হ’য়ো মোর সখা
মোর জাতি কুল মান তনু মন প্রাণ হে কিশোর হ’রে নিও॥
রাধিকার সম কুব্জার সম রুক্সিণী সম মোরে
গোকুল মথুরা দ্বারকায় নাথ রেখো তব সাথী করে।
	গোপনে চেয়ো সব শত গোপীকায়
	চন্দ্রাবলী ও সত্যভামায়
তেমনি হে নাথ চাহিও আমায় লুকায়ে ভালেবাসিও॥

বাণী

গাহ নাম অবিরাম কৃষ্ণনাম কৃষ্ণনাম।
মহাকাল যে নামের করে প্রাণায়াম।।
যে নামের গুণে কংস কারার খোলে দ্বার।
বসুদেব যে নামে যমুনা হ’ল পার।
যে নাম মায়ায় হল তীর্থ ব্রজধাম।।
দেবকীর বুকের পাষাণ গলে,
যে নাম দোলে যশোদার কোলে।
যে নাম লয়ে কাঁদে রাই রসময়ী,
কুরুক্ষেত্রে যে নামে হল পান্ডব জয়ী।
গোলকে নারায়ণ, ভূলোকে রাধাশ্যাম।।

বাণী

গুল–বাগিচার বুলবুলি আমি রঙিন প্রেমের গাই গজল।
অনুরাগের লাল শারাব মোর আঁখি ঝলে ঝলমল (হায়)।।
	আমার গানের মদির ছোঁয়ায়
	গোলাপ কুঁড়ির ঘুম টুটে যায়,
সে গান শুনে প্রেমে–দীওয়ানা কবির আঁখি ছলছল (হায়)।।
লাল শিরাজীর গেলাস হাতে তন্বী সাকি পড়ে ঢুলে,
আমার গানের মিঠা পানির লহর বহে নহর–কূলে।
ফুটে ওঠে আনারকলি নাচে ভ্রমর রং–পাগল (হায়)।।
	সে সুর শুনে দিশেহারা
	ঝিমায় গগন ঝিমায় তারা,
চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা বনের চোখে১ শিশির জল (হায়)।।

১. বনের পাতায়