বাণী

নিত্য শুদ্ধ কল্যাণ রূপে আছ তুমি মোর সাথে।
সান্দ্র নিবিড় সন্ধ্যায় যেই পথ ভুলি’, ধর হাতে।।
	প্রদোষে স্বরগ-পাশে
	তোমার করুণা ভাসে,
স্নিগ্ধ শান্ত চাঁদ হ’য়ে, প্রভু, আঁধারে পথ দেখাতে।।
মান তাজিয়া যে যায় প্রভু তোমার চরণ-তলে,
পূর্ণ-রূপে নেমে আস তার হৃদয়-পদ্ম-দলে।
	অবতার হও ভুপালিতে প্রভু
	প্রেম-যমুনার পারে রহ কভু,
দগ্ধ-পরানে বিরাজ হে স্বামী, দুঃখ-জ্বালা জুড়াতে।।

বাণী

নতুন চাঁদের তক্‌বীর শোন্‌ কয় ডেকে ঐ মুয়াজ্জিন —
আসমানে ফের ঈদুজ্জোহার চাঁদ উঠেছে মুসলেমিন।।
এলো স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুজ্জোহার এই সে চাঁদ,
তোরা ভোগের পাত্র ফেল্‌ রে ছুঁড়ে ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
প্রাণের যা তোর প্রিয়তম আজকে সে সব আন্‌,
খোদারই রাহে আজ তাহাদের কর রে কোরবান্‌।
কি হবে ঐ বনের পশু খোদারে দিয়ে,
তোর কাম-ক্রোধাদি মনের পশু জবেহ্‌ কর্‌ নিয়ে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
বিলিয়ে দেওয়ার খুশির শিরনি তশ্‌তরিতে আন,
পর্‌ রে তোরা সবাই ত্যাগের রঙিন পিরহান্‌।
মোদের যা কিছু প্রিয় বিলাব সবে
নবীর উম্মত তবে সকলে কবে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।

বাণী

নূপুর মধুর রুনুঝুনু বোলে।
মন-গোকুলে রুনুঝুনু বোলে।।
	কূলের বাঁধন টুটে,
	যমুনা উথলি' ওঠে,
পুলকে কদম ফোটে পেখম খোলে
	শিখী পেখম খোলে।।
ব্রজনারী কুল ভুলে'
	লুটায় সে পদমুলে
চোখে জল, বুকে প্রেম- তরঙ্গ দোলে।।
	শ্রীমতি রাধারই সাথে
	বিশ্ব ছুটেছে পথে,
হরি হরি ব'লে মাতে ত্রিভুবন ভোলে।
	নামে ত্রিভুবন ভোলে।।

বাণী

নিতি নিতি মোরে ডাকে সে স্বপনে,
নিরাশার আলো জ্বলিয়া গোপনে।
জানি না মায়াবিনী কী মায়া জানে
কেবলি বাহিরে পরান টানে,
ঘুরে ঘুরে মরি আঁধার-গহনে।।
শত পথিকে ও-রূপে ছল হানে,
অপরূপ শতরূপে শত গানে।
পথে পথে বাজে তাহারি বাঁশি,
সে-সুরে নিখিল-মন উদাসী;
দহে যাদুকরী বিধুর দহনে।।

বাণী

নীল কবুতর লয়ে নবীর দুলালী মেয়ে খেলে মদিনায়
দেহের জ্যোতিতে তার জাফরানি পিরহান ম্লান হয়ে যায়॥
	মুখে তার নবীজীর মুখেরি আদল
	আঁখি দুটি করুণায় সদা ঢল ঢল,
মেষ শাবকেরে ধরি মধুর মিনতি করি কলেমা শোনায়॥
জুম্মার মস্‌জিদে কোন্ সে ভক্ত পড়ে কোরান আয়াত,
অমনি সে খেলা ভুলি কচি দুটি হাত তুলে করে মোনাজাত।
	নীল দরিয়ার পানি নয়নে বহে
	‘উম্মতে কর ত্রাণ’ কাঁদিয়া কহে
হজরত কোলে তুলে ‘বেহেশ্‌ত্‌ রানী তুমি’ বলে ফাতেমায়॥

বাণী

		নয়ন মুদিল কুমুদিনী হায়!
		তাহার ধ্যানের চাঁদ ডুবে যায়।।
		ভরিল সরসী তা’রি আঁখি-জলে
		ঢলিয়া পড়িল পল্লব-তলে,
অকরুণ নিষাদের তীর সম অরুণ-কিরণ বেঁধে এসে গায়।।
		কপোলের শিশির অভিমানে শুকালো,
		পাপড়ির আড়ালে পরাগ লুকাল।
		সরসীর জলে পড়ে আকাশের ছায়া
		নাই সেথা তারা-দল, চাঁদের মায়া,
জলে ডুবে মেটে না প্রাণের তৃষা হৃদয়ের মধু তার হৃদয়ে শুকায়।।