নিত্য শুদ্ধ কল্যাণ রূপে আছ তুমি মোর সাথে। সান্দ্র নিবিড় সন্ধ্যায় যেই পথ ভুলি’, ধর হাতে।। প্রদোষে স্বরগ-পাশে তোমার করুণা ভাসে, স্নিগ্ধ শান্ত চাঁদ হ’য়ে, প্রভু, আঁধারে পথ দেখাতে।। মান তাজিয়া যে যায় প্রভু তোমার চরণ-তলে, পূর্ণ-রূপে নেমে আস তার হৃদয়-পদ্ম-দলে। অবতার হও ভুপালিতে প্রভু প্রেম-যমুনার পারে রহ কভু, দগ্ধ-পরানে বিরাজ হে স্বামী, দুঃখ-জ্বালা জুড়াতে।।
নমস্তে বীণা পুস্তক হস্তে দেবী বীণাপাণি। শতদল-বাসিনী সিদ্ধি-বিধায়িনী সরস্বতী বেদবাণী।। এসো আমল ধবল শুভ সাত্ত্বিকী বর্ণে, হংস-বাহনে লীলা উৎপল কর্ণে, এসো বিদ্যারূপিণী মা শারদা ভারতী এসো ভীতজনে বরাভয় দানি।। শুদ্ধ জ্ঞান দাও শুভ্র আলোক অজ্ঞান তিমির অপগত হোক। মৃতজনে সঙ্গীত-অমৃত দাও মা বীণাতে মাভৈঃ ঝঙ্কার হানি।
পুরুষ : নবীন বসন্তের রানী তুমি গোলাব-ফুলী রঙ। স্ত্রী : তব অনুরাগের রঙে আমি উঠিয়াছি আজ রেঙে প্রিয় এই অপরূপ ঢঙ।। পুরুষ : পলাশ কৃষ্ণচূড়ার কলি রাঙা ও-পায়ে এলে কি দলি’? স্ত্রী : বেয়ে প্রেমের পথের গলি এলাম কঠোর হৃদয় দলি’, হের পায়ে তাহারি রঙ।। পুরুষ : হায়, হৃদয়-হীনা হৃদয়-সাথি হয় না তা জানি, অবুঝ হৃদয় তবু চাহে তায় জানে সে-পাষাণী। স্ত্রী : ধরিয়া পায়ে প্রেম জানায়ে যাও পালায়ে শেষে কাঁদায়ে কাঁদাই যতই, কাঁদি যে ততই; পুরুষ : বায়ু কেঁদে যায় ফুল ঝরায়ে। স্ত্রী : না, না, যাও যাও মন চেয়ো না গন্ধ লহ, ফুল চেয়ো না; আছে কাঁটা ফুলের সঙ্গ।। উভয়ে : যাই চল সেই কাননে নাই কাঁটা ফুলের সনে যথা নাই বিরহ, শুধু মিলন।।
নীলাম্বরী–শাড়ি পরি’ নীল যমুনায় কে যায়? যেন জলে চলে থল–কমলিনী ভ্রমর নূপুর হয়ে বোলে পায় পায়।। কলসে কঙ্কনে রিনিঠিনি ঝনকে, চমকায় উন্মন চম্পা বনকে, দলিত অঞ্জন নয়নে ঝলকে, পলকে খঞ্জন হরিণী লুকায়।। অঙ্গের ছন্দে পলাশ–মাধবী অশোক ফোটে, নূপুর শুনি’ বনতুলসীর মঞ্জরী উলসিয়া ওঠে। মেঘ–বিজড়িত রাঙা গোধূলি নামিয়া এলো বুঝি পথ ভুলি, তাহার অঙ্গ তরঙ্গ–বিভঙ্গে কুলে কুলে নদী জল উথলায়।।
