বাণী

রাঙা পির্‌হান প'রে শিশু নবী খেলেন পথে।
দেখে হুর-পরীরা সব লুকিয়ে বেহেশ্‌ত হ'তে।।
মোহনী সুরত বাঁকা চাঁদে চন্দন মাখা।
নূরানী রওশনী তাঁর চমকে দিনের আলোতে।।
নাচের তালে তালে সোনার তাবিজ দোলে,
চরণ তলে ধূলি কাঁদে মোহাম্মদ ব'লে।
নীল রেশমি রুমাল বাঁধা তাঁর চাঁচর কেশে
রাঙা সালোয়ার প'রে নাচে সে হেসে হেসে,
খোদার আরশ টলে সে রূপ-সুধা-স্রোতে।।

বাণী

রাধা-তুলসী, প্রেম-পিয়াসি, গোলকবাসী শ্রীকৃষ্ণ নারায়ণ।
নাম জপ মুখে, মূরতি রাখ বুকে ধ্যান দেখ তারি রপ মোহন।।
	অমৃত রসঘন কিশোর-সুন্দর,
	নব নীরদ শ্যাম মদন মনোহর —
সৃষ্টি প্রলয় যুগল নূপুর শোভিত যাহার রাঙা চরণ।।
	মগ্ন সদা যিনি লীলারসে,
	যে লীলা-রস ভরা গোপী-কলসে,
কান্না-হাসির আলো-ছায়ার মায়ায় যাহার মোহিত ভূবন।।

বাণী

রেশমি রুমালে কবরী বাঁধি’ —
নাচিছে আরবি নটিনী বাঁদি।।
বেদুঈনী সুরে বাঁশি বাজে
রহিয়া রহিয়া তাঁবু মাঝে,
সুদূরে সে-সুরে চাহে ঘোম্‌টা তুলিয়া শাহজাদী।।
যৌবন-সুন্দর নোটন কবুতর নাচিছে মরু-নটী
গাল যেন গোলাপ কেশ যেন খেজুর-কাঁদি।।
চায় হেসে হেসে চায় মদির চাওয়ায়,
দেহের দোলায় রং ঝ’রে যায় ঝর্‌ঝর্‌,
ছন্দে দুলে ওঠে মরু মাঝে আঁধি।।

বাণী

রাখ রাখ রাঙা পায়, হে শ্যামরায়!
ভুলে গৃহ স্বজন সবই সঁপেছি তোমায়॥
সংসার মরু ঘোর, নাহি তরু-ছায়া,
নব নীরদ শ্যাম, আনো মেঘ-মায়া;
আনন্দ-নীপবনে নন্দ-দুলাল এসো,
বাহও উজান, হরি, অশ্রুর যমুনায়॥
একা জীবন মোর গহন ঘন ঘোর,
এসো এ বনে বনমালী, গোপ কিশোর,
কুঞ্জ রচেছি দুখ-শোক তমাল-ছায় -  
প্রেম-প্রীতির গোপী চন্দন শুকায়ে যায়॥
দারা সুত প্রিয়জন, হরি হে, নাহি চাই,
পদ্মা-পলাশ-আঁখি যদি দেখিতে পাই;
রাখাল-রাজা এসো, এসো হে ঋষিকেশ,
গোকুলে লহ ডাকি’, অকূলে ভাসি হায়॥

বাণী

রস-ঘনশ্যাম-কল্যাণ-সুন্দর।
প্রশান্ত সন্ধ্যার উদার শান্তি দাও —
শ্রান্ত মনের ভার হর, হে গিরিধর।।
যে নিবিড় সমাধির গভীর আনন্দে
হিমালয় লীলায়িত নীরব ছন্দে,
সেই মহাযোগে কর মোরে মগ্ন —
যে মহাভাবে ভোর মৌন নীলাম্বর।। 
অপগত-দুখশোক নিশীথ সুষুপ্তির মাঝে,
নিথর সিন্ধুর অতল তলে যে শান্ত বিরাজে।
যে সুধা লভিয়া ঋষি মধুছন্দা
আনিল বেদবাণী অলকানন্দা
অন্তরে বাহিরে সেই অমৃত দাও —
কর পুরুষোত্তম অজর অমর।।

বাণী

রে অবোধ!		শূন্য শুধু শূন্য ধূলো মাটির ধরা।
শূন্য ঐ		অসীম আকাশ রংবেরং-এর খিলান-করা।।
হাওয়াতে		শূন্য নিমেষ নিমেষে যার হ’য়ে শেষ।
এসেছি		পথিক এ পর-দেশ জীবন-মৃত্যু ভরা।।
হুরী আর		গানের প্রিয়া, সাথে তার শারাব নিয়া
চল ঐ		সবুজ-বিথার ঝর্না-কিনার গোলাব-ঝরা।।
এর অধিক		সুখের বিলাস স্বরগে করিসনে আশ
সে স্বরগ		নাই রে কোথাও এমন উধাও দুখ্-পসরা।।