ম্লান আলোকে ফুটলি কেন গোলক-চাঁপার ফুল
বাণী
ম্লান আলোকে ফুটলি কেন গোলক-চাঁপার ফুল। ভূষণহীনা বনদেবী কার হ'রি তুই দুল।। হার হ'বি কার কবরীতে সন্ধ্যারানী দূর নিভৃতে, ব'সে আছে অভিমানে ছড়িয়ে এলোচুল।। মাটির ধরার ফুলদানিতে তোর হবে কি ঠাঁই, আদর কে আর করবে তোরে, বসন্ত যে নাই হায় বসন্ত নাই। গোলক-চাঁপা খুঁজিস কারে — সে দেবতা নাই রে হেথা শূন্য যে আজি গোকুল।।
মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি
বাণী
মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি। যে মাটির বুকে আছে পাকা ধানের সোনার কাঠি॥ ফসল বুনে রোদের তাতে উঠি যখন ঘেমে সদয় হয়ে আকাশ বেয়ে বৃষ্টি আসে নেমে (ওরে) মুচকি হেসে বৌ এনে দেয় পান্তা ভাতের বাটি॥ আশ মেটে না চারা ধানের পানে চেয়ে চেয়ে মরাই ভ’রে থাকবে ওরাই আমার ছেলে মেয়ে। (আমি) চাই না স্বর্গ, পাই যদি এই পাকা ধানের আটি (রে ভাই)॥ জল নিতে যায় আড়চোখে চায় বৌ-ঝি নদীর কূলে খুশিতে বুক ভ’রে ওঠে, খাটুনি যাই ভুলে। এ মাঠ নয় ভাই বৌ পেতেছে ঠান্ডা শীতল পাটি॥
মেঘের হিন্দোলা দেয় পূব-হাওয়াতে দোলা
বাণী
মেঘের হিন্দোলা দেয় পূব-হাওয়াতে দোলা। কে দুলিবি এ-দোলায় আয় আয় ওরে কাজ-ভোলা॥ মেঘ-নটীর নূপুর ঐ বাজে ঝুমুর ঝুমুর, শীর্ণা-তনু ঝর্না তরঙ্গ-উতরোলা॥ ফুল-পসারিণী ঐ দুলিছে বনানী বিনিমূলে বিলায় সে সুরভি, ফুল ছানি। আজ ঘরে ঘরে ফুল-দোল্ সব বন্ধ দুয়ার খোলা॥ জলদ-মৃদঙ বাজে গভীর ঘন আওয়াজে, বাদলা-নিশীথ দুলে ঐ তিমির-কুন্তলা॥
মাদল বাজিয়ে এলো বাদলা মেঘ
বাণী
মাদল বাজিয়ে এলো বাদলা মেঘ এলোমেলো মাতলা হাওয়া এলো বনে। ময়ূরী নাচে কালো জামের গাছে পিয়া পিয়া বন-পাপিয়া ডাকে গো আপন মনে।। বেত-বনের আড়ালে ডাহুকী ডাকে, ডাকে না এমন দিনে কেহ আমাকে, বেণীর বিনুনী খুলে পড়ে একলা মন টেকে না ঘরের কোণে।। জঙ্গল পাহাড় কাঁপে বাজের আওয়াজে, বুকের মাঝে তবু নূপুর বাজে।। ঝিঁঝিঁ তার ডাক ভুলে ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বৃষ্টির বাজ্না শোনে।।
মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে
বাণী
মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে (রে) সেই দেশে মেঘ জল ঢালিও তাহার আকুল কেশে।। তাহার কালো চোখের কাজল শাওন মেঘের চেয়ে শ্যামল চাউনিতে তার বিজলি ছড়ায় চমক বেড়ায় ভেসে (রে)।। সে ব’সে থাকে পা ডুবিয়ে ঘুমতী নদীর জলে কভু দাঁড়িয়ে থাকে ছবির মত একলা তরু-তলে (রে)। কদম ফুলের মালা গেঁথে ছড়িয়ে সে দেয় ধানের ক্ষেতে তারে দেখতে পেলে আমার কথা (তারে) কইও ভালোবেসে।।