বাণী

রেশ্‌মি চুড়ির শিঞ্জিনীতে রিমঝিমিয়ে মরম কথা
পথের মাঝে চম্‌কে’ কে গো থম্‌কে’ যায় ঐ শরম-নতা।।
	কাঁখ-চুমা তার কলসি-ঠোঁটে
	উল্লাসে জল উল্‌সি’ ওঠে,
	অঙ্গে নিলাজ পুলক ছোটে
			বায় যেন হায় নরম লতা।।
অ-চকিতে পথের মাঝে পথ-ভুলানো পরদেশিকে
হান্‌লে দিঠি পিয়াস-জাগা পথ্‌বালা এই উর্বশীকে!
	শূন্য তাহার কন্যা হিয়া
	ভর্‌ল বঁধুর বেদ্‌না নিয়া,
	জাগিয়ে গেল পর্‌দেশিয়া
			বিধুর বধূর মধুর ব্যথা।।

বাণী

শ্যামা নামের ভেলায় চ'ড়ে কাল-নদীতে দুলি।
ঘাটে ঘাটে ঘটে ঘটে (আমি) সুরের লহর তুলি।।
	কাল-তরঙ্গে ভাসিয়ে অঙ্গ,
	দেখে বেড়াই কত রঙ্গ,
কায়ায় কায়ায় রঙ-বেরঙের (ওরে) শত মায়ার ঠুলি।।
জন্মান্তর ঘাটে ঘাটে ভাসি উঠি ডুবি
মা নিশিদিন ডাকে আমায়, 'ওরে আয় আমারে ছুঁবি'।
	মোরে কাল-স্রোতে ভাসানের ছলে
	মা লীলা দেখান নাট-মহলে
ওই খেলার (ছলে) শেষে আপনি এসে (মা) বক্ষে নেবেন তুলি।।

বাণী

ফিরিয়া যদি সে আসে আমার খোঁজে ঝরা গোলাবে।
আনিয়া সমাধি পাশে আমার বিদায় বাণী শোনাবে।।
	বলিও তারে এখানে এসে
	ডাকে যেন মোর নাম ধ’রে সে,
রবাব যবে কাঁদিবে রমলা সুরের কোমল রেখাবে।।
	তৃষিত মরুর ধুসর গগন
	যেমন হেরে মেঘের স্বপন,
তেমনি দারুণ তিয়াসা লয়ে কাটিল আমার বিফল জীবন —
একটি ফোঁটা আঁখি–জল ঝরে যেন তার হাতের শরাবে।।

বাণী

আঁধার রাতের তিমির দুলে আমার মনে।
দুলে গো আমার ঘুমে -  জাগরণে॥
হতাশ-ভরা বাতাস বহে,
আমার কানে কি কথা কহে;
দিনগুলি মোর যায় যে ঝ’রে যায় —
ওগো যায় যে ঝ’রে ঝরা পাতার সনে॥
গিয়াছে চলিয়া সুখে যাহারা ছিল গো সাথি,
গিয়াছে নিভিয়া জ্বলিতেছিল যে শিয়রে বাতি।
স্মৃতির মালার ফুল শুকাইয়া,
একে একে হায় পড়িছে ঝরিয়া;
বিদায়-বেলা শুনিয়ে বাঁশি ক্ষণে ক্ষণে॥

বাণী

প্রেম আর ফুলের জাতি কুল নাই,
বুল্‌বুলি সে কথা ভুলিল কি হায়।
সে কেন তবে আসে না
রাতের ফুল মোর হাতে শুকায়।।
রাজ-বাগিচার ফুল হোক যত গরবী
পথের ফুলেও আছে তা’রি মত সুরভি,
রসের পুতলী হয় পথের ভিখারিনী
		যদি প্রেম পায়।।

বাণী

পুরুষ 	: 	বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে পথহারা ফিরি দ্বারে দ্বারে।
স্ত্রী 		: 	বাইরে হিম ঝরে ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বন্ধু এসো এপারে।।
পুরুষ 	: 	তোমারে বুঝি না বুঝি বা আধেক
স্ত্রী 		: 	নয়নের ভাষা বঁধু সব দেশে এক,
পুরুষ 	: 	তুমি ঊষা, ল’য়ে তুষার কর খেলা — ভোরবেলা।
স্ত্রী 		: 	পুবের তপন সম রাঙাও জীবন মম তোমার কিরণধারে।।
পুরুষ 	: 	তব কণ্ঠে সুর শুনি হায় সকরুণ স্মৃতি জাগায়,
স্ত্রী 		: 	বিদেশি চেরী-কুসুমের মালিকা লহ গলায়।
উভয়ে	:	চল যাই যেথা নাই দেশের বন্ধন
			নাহি গো ক্রন্দন,
			নিরুদ্দেশের পথে প্রেম অভিসারে।।