বাণী

(কার)	ঝর ঝর বর্ষণ বাণী
	যায় দিক দিগন্তে বেদনা হানি’।।
	করুণ সুরে দূর অলকায়
	যেন অবিরল বীণা বাজায়
		বিরহের বীণাপাণি।।
	গীত পিপাসিত বসুন্ধরা
	শোনে সেই সুর প্রাণ উদাস করা।
	তারি ভাষায় বেদনা আভাস
	কাঁদায় ভুবন আকাশ বাতাস
		পথ প্রান্তর বনানী।।

বাণী

কেন মরিতে আসিলাম যমুনায়, ললিতা কেন বিপরীত হেরিলাম।
কৃষ্ণ-যমুনা-জলে কারে ল’য়ে কুতুহলে জল-খেলা করে ঘনশ্যাম।।
কালো মেঘের যেন খেলে বিজলি
সোনার-প্রতিমার প্রতিবিম্ব কালো জলে
কালো মেঘে যেন খেলে বিজলি।
হিরন্ময়ী জ্যোতির্ময়ী সতিনীর রূপ আমি যত দেখি গো তত মজি সখি গো!
অতি জ্যোতি গর্বিতা যেন পতি সোহাগিনী সতীসম কে এ সতিনী, ললিতে,
মোর শ্যাম অঙ্গে অপরূপ ভঙ্গে আমারই সমুখে করে খেলা, মোরে ছলিতে।
ও কি কায়া না ছায়া!
ও কি কৃষ্ণ রূপের চঞ্চল জল-তরঙ্গ মায়া?
সখি মান ভাঙাতে মোর এসেছিল গোপনে শ্যাম আজি প্রভাতে (সখি),
শ্যাম-তনুমুকুরে হেরিলাম বিরাজে গৌর-বর্ণা নারী অপরূপ শোভাতে।
এলো অভিমান মনে, তাই
মনে হলে যমুনায় ডুবিয়া ললিতা শান্তি যদি পাই।
এখানেও দেখি সেই গৌরী কিশোরী আছে শ্যামে জড়ায়ে।
(ও কি কায়া না মায়া ও কি কৃষ্ণেরই রঙ্গ না আমারই ছায়া কায়া না মায়া।)
কোন্ দেশে যাব সখি কোন্ খানে পাব শ্যামে একাকী।
আন-নারীরে ছেড়ে কেবল রাধার হয়ে দেবে না দেখা কি (সখী গো)।।

গীতিচিত্র : ‘অভিমানিনী’

বাণী

কেমনে রাখি আঁখি–বারি চাপিয়া
প্রাতে কোকিল কাঁদে নিশীথে পাপিয়া।।
এ ভরা ভাদরে আমার মরা নদী
উথলি’ উথলি’ উঠিছে নিরবধি
আমার এ ভাঙা ঘটে, আমার এ হৃদিতটে
চাপিতে গেলে ওঠে দু’কূল ছাপিয়া।।
নিষেধ নাহি মানে আমার এ পোড়া আঁখি
জল লুকাবো কত কাজল মাখি’ মাখি’
ছলনা ক’রে হাসি, অমনি জলে ভাসি
ছলিতে গিয়া আসি ভয়েতে কাঁপিয়া।।

বাণী

কালা		এত ভাল কি হে কদম্ব গাছের তলা।
আমি		দেখ্‌ছি কত দেখ্‌ব কত তোমার ছলাকলা;
আমি		নিতুই নিতুই সবই কত, (কালা) তিন সতিনের জ্বালা॥
আমি		জল নিতে যাই যমুনাতে তুমি বাজাও বাঁশি হে,
		মনের ভুলে কলস ফেলে তোমার কাছে আসি হে,
শ্যাম		দিন-দুপুরে গোকুলপুরে (আমার) দায় হল পথ চলা॥
আমার	চারদিকেতে ননদ-সতীন দু’কূল রাখা ভার,
		আমি সইব কত আর বাঁকা শ্যাম।
ওরা		বুঝছে সবই নিত্যি-নতুন, (নিতি) মিথ্যে কথা বলা॥

বাণী

কেন তুমি কাঁদাও মোরে, হে মদিনাওয়ালা!
অবরোধবাসিনী আমি কুলের কুলবালা।।
ঈদের চাঁদের ইশারাতে কেন ডাক নিঝুম রাতে,
হাসিন ইউসুফ! জুলেখারে কত দিবে জ্বালা।।
একি লিপি পাঠালে নাথ কোরানের আয়াতে —
পড়তে গিয়ে অশ্রু-বাদল নামে আঁখি-পাতে।
বাজিয়ে শাহাদতের বাঁশি কেন ডাক নিত্য আসি';
হাজার বছর আগে তোমায় দিয়েছি তো মালা।।

বাণী

করিও ক্ষমা হে খোদা আমি গুণাহগার অসহায়।
কাজের মাঝে অবসর পাই না ডাকিতে তোমায়।।
যতবার তোমার পথে হে খোদা যেতে চেয়েছি
বাহির ভিতর হ’তে হাজারো বাধা পেয়েছি,
তোমার পথের দুশমন ঘরে-বাহিরে-দুনিয়ায়।।
দুঃখ-শোক-ব্যাধির তাড়নায় শুনিয়াও শুনিনি আজান,
বান্দার সে-অপরাধ করিও ক্ষমা হে রহমান।
আমি যে কাঙাল ভিখারি পুণ্যের পুঁজি নাহি
শূন্য হাতে আমারে ফিরায়ো না হে ইলাহি,
করো না নিরাশ যদিও শরণ যাচি অবেলায়।।