ঝর্ঝর নির্ঝর ধারা বহে
বাণী
ঝর্ঝর নির্ঝর ধারা বহে, পাহাড়ি পথে। যেন বন-দেবীর বীণা বাজে ভোর আলোতে।। ঝিকিমিকি ঝিকিমিকি প্রভাতী তারা শোনে সেই জল-ছলছল সুর তন্দ্রাহারা, গ’লে পড়ে আনন্দে তুষার ধারা গিরি-শিখর হ’তে।। রঙিন প্রজাপতি অলস মনে, হাল্কা, পাখায় ফেরে দোপাটি-বনে। শোনে মঞ্জীর বনলক্ষ্মীর, কঙ্কণ চুড়ি বাজে নুড়ির তালে, পাষাণ-জাগানো ঝরনা-স্রোতে।।
ঝুলনের এই মধু লগনে
বাণী
ঝুলনের এই মধু লগনে। মেঘ দোলায় দোলে; দোলে রে বাদল গগনে।। উদাসী বাঁশির সুরে ডাকে শ্যামরায়, ব্রজের ঝিয়ারি আয়, পরি নীল শাড়ি আয়, নীল কমল কুঁড়ি দোলায়ে শ্রবণে।। বাঁশির কিশোর ব্রজগোপী চিতচোর, অনুরাগে ডাকে আয় দুলিবি কে ঝুলনে।। মেঘ মৃদং বাজে, বাজে কী ছন্দে, রিমঝিম বারিধারা ঝরে আনন্দে। বুঝি এলো গোকুল ব্রজে নেমে কৃষ্ণ রাখাল প্রেমে শুনি বাঁশি তায় ফোটে হাসি গোপীজন আননে।।
ঝড়-ঝঞ্ঝার ওড়ে নিশান
বাণী
ঝড়-ঝঞ্ঝার ওড়ে নিশান, ঘন-বজ্রে বিষাণ বাজে। জাগো জাগো তন্দ্রা-অলস রে, সাজো সাজো রণ-সাজে।। দিকে দিকে ওঠে গান, অভিযান অভিযান! আগুয়ান আগুয়ান হও ওরে আগুয়ান ফুটায়ে মরুতে ফুল-ফসল। জড়ের মতন বেঁচে কি ফল? কে র’বি প’ড়ে লাজে।। বহে স্রোত জীবন-নদীর, চল চঞ্চল অধীর, তাহে ভাসিবি কে আয়, দূর সাগর ডেকে যায়। হ’বি মৃত্যু-পাথার পার, সেথা অনন্ত প্রাণ বিরাজে।। পাঁওদল্ রণে চল্, চল্ রণে চল্ পাঁওদল আগে চল্, চল্ রণে চল্ মরুতে ফোটাতে পারে ওই পদতল প্রাণ-শতদল। বিঘ্ন-বিপদে করি’ সহায় না-জানা পথের যাত্রী আয়, স্থান দিতে হবে আজি সবায়, বিশ্ব-সভা-মাঝে।।
ঝাঁপিয়া অঞ্চলে কেন বিধুবদন অবনত
বাণী
ঝাঁপিয়া অঞ্চলে কেন বিধুবদন অবনত কাঁদে নয়ান। অভিমান পরিহর হরি-হৃদি বিহারিণী প্রেম দিয়া জুড়াও এ প্রাণ। তুয়া বিনা নয়নে অন্যে না হেরি একই রাধা আছে ত্রিভুবন ঘেরি’ (আমি রাধা ছাড়া জানি’ না অনন্ত বিশ্বে রাধারই রূপধারা, রাধা ছাড়া দেখি না) ভৃঙ্গার ভরি’ তুমি শৃঙ্গার রস করাও পান, তাই হই যে অবশ।। তুমি রাধা হয়ে মধু দিলে মাধব হই, তুমি ধারা হয়ে নামিলে সৃষ্টিতে রই রাধা, সকলি তোমার খেলা তবে কেন কর অভিমান, কেন কর হেলা। প্রতি দেহ-বিম্বে তোরি পদতলে হর হয়ে রহি তাই ছবি। হরিরত হর-জ্ঞান মহামায়া হরিলী (এ যে) তোমারই ইচ্ছা, আমি নিজে নিজে রূপ ধরিণী। ভোল মানের খেলা দূরে থেকোনা, দাও চরণ ভেলা আমি তরে’ যাই, তরে’ যাই রাধা-প্রেম যমুনায় ডুবিয়া মরে’ যাই।।
পাঠান্তর : রেকর্ডের জন্য কবি এই গানটির বহু অংশ বর্জন করেন।বর্জিত অংশগুলো এই:
গলে দিয়া পীতধড়া গো, পদতলে দিয়া শিখী-চূড়া গো
পদযুগ ধরিয়া চাহি ক্ষমা, ক্ষম অপরাধ প্রিয়তমা!
হরি-মনোরমা ক্ষমা কর গো।।
তব প্রেমে অবগাহন করি সব দাহন চিরতরে জুড়াব
কল্প-কদম-তরু-তলে চিরদিন তোমার প্রেম-কণা কেশর কুড়াব।।