বাণী

শ্যাম-সুন্দর-গিরিধারী।
মানস মধু-বনে মধুমাধবী সুরে মুরলী বাজাও বনচারী।।
মধুরাতে হে হৃদয়েশ মাধবী চাঁদ হয়ে এসো,
হৃদয়ে তুলিও ভাবেরই উজান রস-যমুনা-বিহারী।।
অন্তর মন্দিরে প্রীতি ফুলশয্যায় বিলাস কর লীলা-বিলাসী,
আঁখির প্রদীপ জ্বালি' শিয়রে জাগিয়া রব শ্যাম, তব রূপ-পিয়াসি।
যত সাধ আশা গেল ঝরিয়া, পর তাই গলে মালা করিয়া;
নূপুর করিব তব চরণে গাঁথি' মম নয়নের বারি।।

বাণী

মধুর আরতি তব বিশ্ব সভাতে
নিত্য হেরি নাথ সন্ধ্যায় প্রভাতে।।
চন্দ্র, সূর্য, দীপ গগন-থালা
শ্বেত মেঘ-চন্দন, তারার মালা
মলয় সমীর পূজা-ধূপের গন্ধ
ঝরা ফুল-অঞ্জলি ধরণীর হাতে।।
শঙ্খ বাজায় তব সাগর-কল্লোল
বজ্র রবে ঘন ঘন্টার রোল
বিগ্রহ নিখিল সৃষ্টি-আঙিনায়।
(তব) শান্ত সত্ব-পাখা প্রণব-ওঙ্কার
ঝমঝম বৃষ্টিতে ঝাঁঝর ঝঙ্কার।
দেবদাসী সম কোটি গ্রহ ঘুরে ঘুরে
তোমার বন্দনা-নৃত্যে মাতে।।

বাণী

পরদেশি বঁধুয়া, এলে কি এতদিনে
আসিলে এতদিন কেমনে পথ চিনে।।
তোমারে খুঁজিয়া কত রবি-শশী
অন্ধ হইল প্রিয় নিভিল তিমিরে
তব আশে আকাশ-তারা দ্বীপ জ্বালি'
জাগিয়াছে নিশি ঝুরিয়া শিশিরে।
শুকায়েছে স্বরগ দেবতা তোমা বিনে।।
কত জনম ধরি' ছিলে বল পাসরি'
এতদিনে বাঁশরি বাজিল কি বিপিনে।।

বাণী

কিশোর গোপ-বেশ মুরলিধারী শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ।
দ্বিভুজ শ্যাম সুন্দর মূরতি অপরূপ অনিন্দ্য।।
	পরমাত্মারূপী পরম মনোহর
	গোলকবিহারী চিন্ময় নটবর,
ময়ূর পাখাধারী চিকুর চাঁচর মণি-মঞ্জীর শোভিত শ্রীচরণারবিন্দ।।
গলে দোলে নব বিকশিত কদম ফুলের মালা
খেলে ঘিরে যাঁরে প্রেমময়ী গোপবালা,
	শোভিত স্বর্ণবর্ণ পীতবাসে
	ওঙ্কার বিজড়িত শ্রীরাধার পাশে,
পদ্মপলাশ আঁখি মৃদু-হাসে — যেরূপ ধেয়ায় মুনি ঋষি দেববৃন্দ।।

বাণী

	কি দিয়ে পূজি ভগবান!
আমার ব’লে কিছু নাহি হরি সকলি তোমারি যে দান
	মন্দিরে তুমি, মূরতিতে তুমি
	পূজার ফুলে তুমি, স্তব-গীতে তুমি,
ভগবান দিয়ে ভগবান পূজা করিতে — তুমি যদি ভাব অপমান॥
	কেমন তব রূপ দেখিনি হরি
	আপন মন দিয়ে তোমারে গড়ি,
কাঁদ না হাস তুমি সে-রূপ হেরি — বুঝিতে পারি না আমি তাই কাঁদে প্রাণ॥
	কোটি রবি-শশী আরতি করে যারে,
	প্রদীপ জ্বালিয়া খুঁজি আমি তারে।
বন-ডালা যাঁর পূজার সম্ভার, যোগী মুনি করে যুগযুগ ধ্যান।
কোথা শ্রীমুখ তব কোথা শ্রীচরণ, চন্দন দিব কোন্‌খান ॥

বাণী

জগতের নাথ কর পার হে
মায়া-তরঙ্গে টলমল তরণী অকুল ভব পারাবার হে।।
নাহি কাণ্ডারি ভাঙা মোর তরী আশা নাই কুলে উঠিবার
আমি গুণহীন ব'লে করো যদি হেলা শরণ লইব তবে কার।।
সঙসারেরি এই ঘোর পাথারে ছিল যারা প্রিয় সাথি
একে একে তারা ছাড়িয়া গেল হায় ঘনাইল যেই দুখ-রাতি।
	ধ্রুবতারা হয়ে তুমি জ্বালো
	অসীম আঁধারে প্রভু আশারই আলো
তোমার করুণা বিনা হে দীনবন্ধু, পারের আশা নাহি আর।।