বাণী

সহসা কি গোল বাঁধালো পাপিয়া আর পিকে
গোলাপ ফুলের টুকটুকে রঙ চোখে লাগে ফিকে।।
	নাই বৃষ্টি বাদল ওলো,
	দৃষ্টি কেন ঝাপসা হলো?
অশ্রু জলের ঝালর দোলে চোখের পাতার চিকে।।
পলাশ-কলির লাল আঁখরে বনের দিকে দিকে
গোপন আমার ব্যথার কথা কে গেল সই লিখে।
	মনে আমার পাইনে লো খেই;
	কে যেন নেই, কি যেন নেই।
কে বনবাস দিল আমার মনের বাসন্তীকে।।

বাণী

কে দুরন্ত বাজাও ঝড়ের ব্যাকুল বাঁশি
আকাশ কাঁপে সে সুর শুনে সর্বনাশী।।
	বন ঢেলে দেয় উজাড় ক'রে
	ফুলের ডালা চরণ' পরে,
নীল গগনে ছুটে আসে মেঘের রাশি।।
বিপুল ঢেউয়ের নাগর-দোলায় সাগর দুলে
বান ডেকে যায় শীর্ণা নদীর কুলে কূলে
	তোমার প্রলয় মহোৎসবে
	বন্ধু ওগো, ডাকবে কবে?
ভাঙবে আমার ঘরের বাঁধন কাঁদন হাসি।।

বাণী

মরম-কথা গেল সই মরমে ম’রে।
শরম বারণ যেন করিল চরণ ধ’রে।।
ছল ক’রে কত শত সে মম রুধিত পথ
লাজ ভয়ে পলায়েছি সে ফিরেছে ব্যথাহত
অনাদরে প্রেম-কুসুম গিয়াছে ম’রে।।
কত যুগ মোর আশে ব’সে ছিল পথ-পাশে
কত কথা কত গান জানায়েছে ভালোবেসে
শেষে অভিমানে নিরাশে গিয়াছে স’রে।।

বাণী

আয় মা চঞ্চলা মুক্তকেশী শ্যামা কালী।
নেচে নেচে আয় বুকে আয়, দিয়ে তাথৈ তাথৈ করতালি।।
		দশদিক আলো ক’রে
		ঝঞ্ঝার নূপুর প’রে,
দুরন্ত রূপ ধ’রে আয় মায়ার সংসারে আগুন জ্বালি’।।
আমার স্নেহের রাঙাজবা পায়ে দ’লে
কালো রূপ-তরঙ্গ তুলে১
গগন-তলে সিন্ধুজলে
আমার কোলে আয় মা আয়।
		তোর চপলতায় মা কবে
		শান্ত ভবন প্রাণ-চঞ্চল হবে,
এলোকেশে এনে ঝড় মায়ার এ খেলাঘর ভেঙে দে মা আনন্দ-দুলালি।।

১. কালোরূপ — তরঙ্গ তুলে সাগর জলে

বাণী

	আমার মালায় লাগুক তোমার মধুর হাতের ছোঁওয়া
	ঘিরুক তোমায় মোর আরতি পূজা-ধূপের ধোঁওয়া।।
		পূজায় ব'সে দেব-দেউলে
		তোমায় দেখি মনের ভুলে
প্রিয়	তুমি নিলে আমার পূজা হবে তারই লওয়া
		হবে দেবতারই লওয়া।।
		তুমি যেদিন প্রসন্ন হও ঠাকুর চাহেন হেসে
	কাঁদলে তুমি, বুকে আমার দেবতা কাদেঁন এসে।
		আমি অন্ধকারে ঠাকুর পুজে
		ঘরের মাঝে পেলাম খুজেঁ
	সে যে তুমি, আমার চির অবহেলা-সওয়া।।

বাণী

যখন আমার কুসুম ঝরার বেলা তখন তুমি এলে
ভাটির স্রোতে ভাসলো যখন ভেলা পারের পথিক এলে।।
	আঁধার যখন ছাইল বনতল
	পথ হারিয়ে এলে হে চঞ্চল
দীপ নিভাতে এলে হে বাদল ঝড়ের পাখা মেলে।।
শূন্য যখন নিবেদনের থালা তখন তুমি এলে
শুকিয়ে যখন ঝরল বরণ-মালা তখন তুমি এলে।
	নিরশ্রু এই নয়ন পাতে
	শেষ পূজা মোর আজকে রাতে
নিবু নিবু প্রাণ শিখাতে আরতি দীপ জ্বেলে।।