বাণী

কেউ		ভোলে না কেউ ভোলে অতীত দিনের স্মৃতি
কেউ		দুঃখ ল’য়ে কাঁদে কেউ ভুলিতে গায় গীতি।।
কেউ		শীতল জলদে হেরে অশনির জ্বালা
কেউ		মুঞ্জরিয়া তোলে তার শুষ্ক কুঞ্জ–বীথি।।
হেরে		কমল–মৃণালে কেউ কাঁটা কেহ কমল।
কেউ		ফুল দলি’ চলে কেউ মালা গাঁথে নিতি।।
কেউ		জ্বালে না আর আলো তার চির–দুখের রাতে,
কেউ		দ্বার খুলি’ জাগে চায় নব চাঁদের তিথি।।

বাণী

আমি অগ্নি-শিখা, মোরে বাসিয়া ভালো।
যদি চাও, তব অন্তরে প্রদীপ জ্বালো।।
মোর দহন-জ্বালা র’বে আমারি বুকে,
তব তিমির রাতে হ’ব রঙিন আলো।।
হ’ব তোমার প্রেমে নব উদয়-রবি,
আমি মুছাব প্রাণের তব বিষাদ-কালো।।
ল’য়ে বহ্নি-দাহ, প্রিয়! করো না খেলা,
কবে লাগিবে আগুন, হায়! ভাঙিবে মেলা।
শেষে আমার মতো কেন মরিবে জ্ব’লে,
তুমি মেঘের মায়া, শুধু সলিল ঢালো।।
মোরে আঁচলে ঢেকে’ তুমি বাঁচালে ঝড়ে,
আজ তুমিই আবার তা’রে নিভায়ো না লো।।

বাণী

মণি-মঞ্জির বাজে অরুণিত চরণে সখি
রুনু ঝুনু রুনু ঝুনু মণি-মঞ্জির বাজে।
হের গুঞ্জা-মালা গলে বনমালী চলিছে কুঞ্জ মাঝে।।
চলে নওল কিশোর,
হেলে দুলে চলে নওল কিশোর।
হেরি সে লাবনি কৌস্তুভমণি নিষ্প্রভ হ’ল লাজে।
চরণ-নখরে শ্যামের আমার চাঁদের মালা বিরাজে।। সখি গো —
বঁধূর চলার পথে পরান পাতিয়া র’ব চলিতে দলিয়া যাবে শ্যাম;
আমি হইয়া পথের ধূলি বক্ষে লইব তুলি’ চরণ-চিহ্ন অভিরাম।
ভুলে যা তোরা রাধারে কৃষ্ণ-নিশির আঁধারে
হারায়ে সে গেছে চিরতরে,
কালো যমুনার জলে ডুবেছে সে অতল তলে
ভেসে গেছে সে শ্যাম-সাগরে।।
ঐ বাঁশি বাজিছে শোন রাধা ব’লে,
তরুণ তমাল চলে, অঙ্গ-ভঙ্গে শিখি-পাখা টলে।
তা’র হাসিতে বিজলি, কাজল-মেঘে যেন উঠিছে উছলি’।
রূপ দেখে যা দেখে যা,
কোটি চাঁদের জোছনা-চন্দন মেখে যা, মোর শ্যামলে দেখে যা।।

বাণী

আমি	সন্ধ্যামালতী বনছায়া অঞ্চলে
	লুকাইয়া রই ঘন পল্লব তলে ॥
	বিহগের গীতি ভ্রমরের গুঞ্জন, নীরব হয় যখন –
আমি	চাঁদেরে তখন পূজা করি আঁখি-জলে ॥
আমি	লুকাইয়া কাঁদি বনের শকুন্তলা
	মনের কথা এ জনমে হ’ল না বলা।
গভীর নিশীথে বন-ঝিল্লির সুরে, ডাকি দূর বন্ধুরে –
আমি	ঝ’ড়ে পড়ি যবে প্রভাতে সবার হৃদয় মুকুল খোলে ॥

বাণী

দেশে দেশে গেয়ে বেড়াই তোমার নামের গান
হে খোদা, এ যে তোমারই হুকুম, তোমারই ফরমান।।
এমনি তোমার নামের আছর –
নামাজ রোজার নাই অবসর,
তোমার নামের নেশায় সদা মশগুল মোর প্রাণ।।
তকদিরে মোর এই লিখেছ হাজার গানের সুরে
নিত্য দিব তোমার আজান আঁধার মিনার-চূড়ে।
কাজের মাঝে হাটের পথে
রণ-ভূমে এবাদতে
আমি তোমার নাম শোনাব, করব শক্তি দান।।

বাণী

	এই	যুগল মিলন দেখ্‌ব ব’লে ছিলাম আশায় ব’সে।
	আমি	নিত্যানন্দ হলাম, পিয়ে, মধুর ব্রজ-রসে।।
	রাই	বিষ্ণুপ্রিয়া আর কানাই গৌর
	হের	নদীয়ায় যুগল রূপ সুমধুর,
তোরা	দেখে যা দেখে যা মধুর মধুর।
মধুর রাই আর মধুর কানাইরে দেখে যা দেখে যা মধুর মধুর।।

নাটক : ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’ (নিত্যানন্দের গান)