বাণী

ঝর ঝর ঝরে শাওন ধারা।
ভবনে এলো মোর কে পথহারা।।
বিরহ রজনী একেলা যাপি
সঘনে বহে ঝড় সভয়ে কাঁপি,
উথলি’ উঠে ঢেউ কুটীরে নাহি কেউ —
গগনে নাহি মোর চন্দ্রতারা।।
নিভেছে গৃহদীপ নয়নে বারি,
আঁধারে তব মুখ নাহি নেহারি।
তোমার আকুল কুন্তল বাসে
চেনা দিনের স্মৃতি স্মরণে আসে,
আজি কি এলে মোর প্রলয়-সুন্দর —
	ঝলকে বিদ্যুতে আঁখি-ইশারা।।

বাণী

		বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা।
		আম কুড়াইবার যাইতাম দুইজন নিশি-ভোরের বেলা।।
		জোষ্ঠি মাসের গুমোঁট রে বন্ধু আস্‌ত নাকো নিদ
					রাত্রে আস্‌ত নাকো নিদ্
		আম-তলায় এক চোর আইস্যা কাঁট্ত প্রাণে সিঁদ্
(আর)	নিদ্রা গেলে ফেল্‌ত সে চোর আঙিনাতে ঢেলা।।
		আমরা দুইজন আম কুড়াইতাম, ডাক্‌ত কোকিল গাছে,
		ভোলো যদি — বিহান বেলার সূয্যি সাক্ষী আছে,
(তুমি)	পায়ের কাছে আম ফেইল্যা গায়ে দিতে ঠেলা।।
		আমার বুকের আঁচল থাইক্যা কাইড়া নিতে আম,
		বন্ধু, আজও পাই নাই দাসী সেই না আমের দাম,
(আজ)	দাম চাইবার গিয়া দেখি তুমি দিছ মেলা।।
		নিশি জাইগ্যা বইস্যা আছি, জোষ্ঠি মাসের ঝড়ে
		সেই না গাছের তলায় বন্ধু এখনো আম পড়ে
		তুমি কোথায় আমি কোথায় দুইজনে একেলা।।

বাণী

চোখের জলে মন ভিজিয়ে যায় চলে ঐ কোন্ উদাসী।
বুকে কেন নীরব বীণা মুখে কেন নেইকো হাসি।।
	আকাশে চাঁদ তারার মেলা
	বনের পথে রঙের ডালা
তবু কেন আঁখিতে ওর উথলে পড়ে অশ্রুরাশি।।
	বনের হাওয়ায় বাজিয়ে বেণু১,
	ছড়িয়ে চলে ফুলের রেণু
বিদেশিকে আন্‌না ডেকে সাধ হয়েছে ভালবাসি।।

১. ফুলেল হাওয়া

বাণী

নাহি ভয় নাহি ভয়।
মৃত্যু সাগর মন্থন শেষ আসে মৃত্যুঞ্জয়।।
কৃষ্ণাতিথির তিমির হরণ
আসিল কৃষ্ণ তিমির বরণ,
দিকে দিকে ঐ গাহে জনগণ —
জয় হে জ্যোতির্ময়।।
দলিত হৃদয়-শতদলে তাঁর
আঁখি-জল-ঘেরা আসন বিথার,
ব্যথা-বিহারীরে দেখিবি কে আয়।
ধ্বংসের মাঝে বংশী বাজায়,
নিখিলের হৃদি বেদনা-আভায় —
নবীন অভ্যুদয়।।

বাণী

এই দেহেরই রঙমহলায় খেলিছেন লীলা-বিহারী।
মিথ্যা মায়া নয় এ কায়া কায়ায় হেরি ছায়া তাঁরি।।
	রূপের রসিক রূপে রূপে
	খেলে বেড়ায় চুপে চুপে,
মনের বনে বাজায় বাঁশি মন-উদাসী বন-চারী।।
	তার খেলা-ঘর তোর এ দেহ
	সে ত নহে অন্য কেহ
সে যে রে তুই, — তবু মোহ ঘুচল না তোর হায় পূজারি।।
	খুঁজিস্ তারে ঠাকুর-পূজায়
	উপাসনায় নামাজ রোজায়,
চাল কলা আর সিন্নি দিয়ে ধর্‌বি তারে হায় শিকারি!
পালিয়ে বেড়ায় মন-আঙিনায় সে যে শিশু প্রেম-ভিখারি।।

বাণী

ভারতলক্ষ্মী মা আয় ফিরে এ ভারতে
ব্যথায় মোদের চরণ ফেলে অরুণ আশার সোনার রথে॥
অশ্রু গঙ্গার জলে ধুই মা তোর চরণ নিতি
ত্রিশ কোটি কণ্ঠে বাজে রোদনে তোর বোধনগীতি
আয় মা দলিত রাঙা হৃদয় বিছানো পথে॥
বিজয়া তোর হ’ল কবে শতাব্দী চলিয়া যায়
ভারত-বিজয়-লক্ষ্মী ভারতে ফিরিয়া আয়
বিসর্জনের কান্না মা এবার তুই এসে থামা
সফল কর এ তপস্যা মা স্থান দে স্বাধীন জগতে॥