বাণী

হায় হায় উঠিল মাতম আকাশ পবন ভুবন ভরি’।
আখেরি নবী দ্বীনের রবি বিদায় নিল বিশ্ব-নিখিল আঁধার করি’।।
অসীম তিমিরে পুণ্যের আলো
আনিল যে চাঁদ, সে কোথায় লুকালো
আকাশে ললাট হানি’ কাঁদিছে মরুভূমি
শোকে গ্রহ-তারকা পড়িছে ঝরি’।।
তৃণ নাহি খায় উট, মেষ নাহি মাঠে যায়;
বিহগ-শাবক কাঁদে জননীরে ভুলি হায়!
বন্ধুর বিরহ কি সহিল না আল্লার,
তাই তারে ডাকিয়া নিল কাছে আপনার’;
হায় কান্ডারি গেল চ’লে রাখিয়া পারের তরী।।

বৈতালিক

বাণী

হেরা হতে হেলে দুলে নূরানী তনু ও কে আসে হায়,
সারা দুনিয়ার হেরেমের পর্দা খুলে খুলে যায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
তার ভাবে বিভোল রাঙা পায়ের তলে
পর্বত জঙ্গম টলমল টলে,
খোরমা খেজুর বাদাম জাফরানি ফুল ঝ’রে ঝ’রে যায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
আসমানে মেঘ চলে ছায়া দিতে,
পাহাড়ের আঁসু গলে ঝরনার পানিতে,
বিজলি চায় মালা হতে,
পূর্ণিমার চাঁদ তার মুকুট হতে চায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।

বাণী

হে মাধব, হে মাধব, হে মাধব!
তোমারেই প্রাণের বেদনা কব তোমারি শরণ লব।।
সুখের সাগরে লহরি সমান
হিল্লোলি’ উঠে যেন তব নমি গান
দুঃখে শোকে কাঁদে যবে প্রাণ যেন নাম না ভুলি তব।।
তুমি ছাড়া বিশ্বে কাহারও কাছে
এ প্রাণ যেন কিছু নাহি যাচে।
যেনতোমারি অধিক কেহ প্রিয় নাহি হয়
বিশ্ব ভুবনে যেন হেনি তুমি-ময়
কলঙ্ক-লাঞ্ছনা যত বাধা ভয় তব প্রেমে সকলি স’ব।।

বাণী

হে প্রিয়! তোমার আমার মাঝে এ বিরহের পারাবার
				কেমনে হইব পার।।
	নিশীথের চখা-চখির মতন
	দুই কূলে থাকি’ কাঁদি দুই জন
আসিল না দিন মোদের জীবনে অন্তহীন আঁধার।।
সেধেছিনু বুঝি বাদ
কাহার মিলনে সে কোন্‌ জনমে তাই মিটিল না সাধ।
	স্মৃতি তব ঝরা পালকের প্রায়
	লুটায় মনের বালুচরে, হায়।
সে কোন্‌ প্রভাতে কোন্‌ নবলোকে মিলিব মোরা আবার।।

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।

বাণী

কৃষ্ণ	: হের আহিরিণী মানস-গঙ্গা দুকূল পাথার।
রাধা	: হরি ভয়ে মরি একা নারী কিসে হব পার।।
কৃষ্ণ	: পারের কাণ্ডারি আমি প্যারী এসো আমার নায়।
রাধা	: ওগো একেলা গোপের কুলবধু আমি, তুমিও তরুণ মাঝি তায়।।
কৃষ্ণ	: যৌবন ভার ভারি পসার রাধে! তবু নাহি ভয়।
রাধা	: ওইটুকু তরী, ভয়ে মরি হরি, ভার যদি নাহি সয়।
উভয়ে	: হের মানস-গঙ্গায় উঠিয়াছে ঢেউ ঝড় বহে অনিবার।।
রাধা	: নাই পারের কড়ি পারে যাব কি করি,
কৃষ্ণ	: দিয়ে মন বাঁধা পারে চল কিশোরী।
উভয়ে	: মোরা ভেসেছি অকূলে প্রেমের গোকুলে কুলের ভয় কি আর।।