দ্রুত-দাদ্‌রা

  • সখি নাম ধ’রে কে ডাকে দুয়ারে

    বাণী

    সখি নাম ধ’রে কে ডাকে দুয়ারে।
    চ’লে যাওয়া বন্ধু বুঝি ফিরে এলো জোয়ারে।।
    	সখি নিত্য আমার বুকের মাঝে
    	যাহার চরণ-ধ্বনি বাজে,
    সেই পায়ের ধ্বনি কানে শুনি আমার আঙিনার ধারে।।
    সাজ পরতে সাধ কেন হয়, বাম অঙ্গ নাচে,
    থাকি থাকি বৌ কথাকও পাখি ডাকে গাছে।
    	গাঙের পারে বাজে বাঁশি
    	চাঁদের মুখে রাঙা হাসি
    মোর মন কেঁদে কয়, সে এসেছে আন্ লো ডেকে উহারে।।
    
  • সন্ধ্যা হলো ঘরকে চলো ও ভাই মাঠের চাষি

    বাণী

    	সন্ধ্যা হলো ঘরকে চলো, ও ভাই মাঠের চাষি
    	ভাটিয়ালি সুরে বাজে রাখাল ছেলের বাঁশি।।
    	পিদিম নিয়ে একলা জাগে একলা ঘরের বধূ
    	হৃদয়-পাতে লুকিয়ে রেখে সারা দিনের মধু;
    	পথ চেয়ে সে বসে আছে কাজ হয়েছে বাসি রে তার
    		কাজ হয়েছে বাসি।
    (যে)	মন সারাদিন ছিল পড়ে হালের গরুর পানে,
    	দিনের শেষে ঘরের জরু সেই মনকে টানে
    	সেথা মেটে ঘরের দাওয়ায় লুটায় রে
    	মেটে ঘরের দাওয়ায় লুটায় কালো চোখের হাসি রে ভাই
    		কালো চোখের হাসি।
    	পুবান হাওয়া ঢেউ দিয়ে যায় আউশ ধানের ক্ষেতে,
    	এই ফসলের দেখব স্বপন শুয়ে শুয়ে রেতে;
    		ও ভাই শুয়ে শুয়ে রেতে
    	সকাল বেলা আবার যেন মাঠে ফিরে আসি রে
    		এই মাঠে ফিরে আসি।।
    

  • সাম্যের গান গাই (দ্বিতীয় খন্ড)

    বাণী

    সাম্যের গান গাই-
    আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
    পুরুষ-হৃদয়হীন,
    মানুষ করিতে নারী দিল তারে আধেক হৃদয় ঋণ।
    ধরায় যাদের যশ ধরে না ক’ অমর মহামানব,
    বরষে বরষে যাদের স্মরণে, করি মোরা উৎসব,
    খেয়ালের বশে তাদের জম্ম দিয়াছে বিলাসী পিতা।
    লব-কুশে বনে ত্যাজিয়াছে রাম, পালন করেছে সীতা!
    নারী সে শিখাল শিশু-পুরুষেরে, স্নেহ প্রেম, দয়া মায়া,
    দীপ্ত নয়নে পরল কাজল বেদনার ঘন ছায়া।
    সে-যুগ হয়েছে বাসি,
    যে যুগে পুরুষ দাস ছিল না ক’, নারীরা আছিল দাসী!
    বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যর যুগ আজি,
    কেহ রহিবেনা বন্দী কাহারও, উঠিছে ডঙ্কা বাজি’!
    নর যদি রাখে নারীরে বন্দী, তবে এর পর যুগে
    আপনারি রচা ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে।
    যুগের ধর্ম এই-
    পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই!
    স্বর্ণ-রৌপ্য অলঙ্কারের যক্ষপুরিতে নারী
    করিল তোমায় বন্দিনী, বল, কোন্‌ সে অত্যাচারী?
    যে ঘোম্‌টা তোমা করিয়াছে ভীরু, উড়াও সে আবরণ!
    দূর ক’রে দাও দাসীর চিহ্ন যেথা যত আভরণ!
    কখন আসিল “প্লুটো” যমরাজা নিশিথ পাখায় উড়ে,
    ধরিয়া তোমায় পুড়িল তাহার আঁধার বিবর-পুরে!
    ভেঙ্গে যম্পুরী নাগিনীর মত আয় মা পাতাল ফুঁড়ি’।
    আধাঁরে তোমায় পথ দেখাবে মা তোমারি ভগ্ন চুড়ি!
    পুরুষ যমের ক্ষুধার কুকুর মুক্ত ও-পদাঘাতে
    লুটায়ে পড়িবে ও-চরণ-তলে দলিত যমের সাথে!
    সেদিন সুদূর নয়-
    যে দিন ধরণী পুরুষের সাথে গাহিবে নারীরও জয়।
    

    কবিতাঃ নারী (দ্বিতীয় খন্ড)

  • সাম্যের গান গাই (প্রথম খন্ড)

    বাণী

    সাম্যের গান গাই-
    আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
    বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
    অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
    বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ-বেদনা-অশ্রুবারি,
    অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
    এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল,
    নারী দিল তাহে রূপ-রস-মধু-গন্ধ সুনির্মল।
    তাজমহলের পাথর দেখেছ, দেখিয়াছ তার প্রাণ?
    অন্তরে তার মমতাজ নারী, বাহিরেতে শা-জাহান।
    জ্ঞানের লক্ষ্মী, গানের লক্ষী, শস্য-লক্ষ্মী নারী,
    সুষমা-লক্ষ্মী নারীই ফিরিছে রূপে রূপে সঞ্চারী’।
    পুরুষ এনেছে দিবসের জ্বালা তপ্ত রৌদ্রদাহ,
    কামিনী এনেছে যামিনী-শান্তি, সমীরণ, বারিবাহ।
    দিবসে দিয়াছে শক্তি-সাহস, নিশীথে হয়েছে বঁধু,
    পুরুষ এসেছে মরুতৃষা লয়ে, নারী যোগায়েছে মধু।
    শষ্যক্ষেত্র উর্বর হল, পুরুষ চালাল হাল,
    নারী সেই মাঠে শস্য রোপিয়া করিল সুশ্যামল।
    নর বাহে হল, নারী বহে জল, সেই জল-মাটি মিশে’
    ফসল হইয়া ফলিয়া উঠিল সোনালী ধানের শীষে।
    নর দিল ক্ষুধা, নারী দিল সুধা, সুধায় ক্ষুধায় মিলে’
    জন্ম লভিছে মহা-মানবের মহা-শিশু তিলে তিলে।
    জগতের যত বড় বড় জয়, বড় বড় অভিযান
    মাতা ভগ্নি ও বধুদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।
    কোন্‌ রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে,
    কত নারী দিল সিঁথির সিদুর, লেখা নাই তার পাশে।
    কত মাতা দিল হৃদয় উপড়ি, কত বোন দিল সেবা,
    বীরের স্মৃতি-স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
    কোনো কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী,
    প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী।
    

    কবিতাঃ নারী (প্রথম খন্ড)

  • সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো

    বাণী

    সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
    			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
    ১ম		:	তোর ঘরে আজ কি রান্ন হায়েছে?
    ২য়		:	ছেলে দুটো ভাত পায়নি, পথ চেয়ে রয়েছে।
    ৩য়		:	আমিও ভাত রাঁধিনি, দেখ্ না চুল বাঁধিনি
    			শাশুড়ি মান্ধাতার বুড়ি মন্দ কথা কয়েছে।
    ৪র্থ		:	আমার ননদ বড় দজ্জাল বজ্জাত গো।
    সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
    			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
    ১ম		:	এত খায় তবু ওদের বউগুলো সুঁট্‌কো
    ২য়		:	ছেলেগুলো প্যাঁকাটি, বাবুগুলো মুট্‌কো।
    ৩য়		:	এরা কাগজের ফুল, এরা চোখে চাঁদ দেখে না।
    ৪র্থ		:	ইটের ভিতরে কীটের মত কাটায় এরা রাত গো।
    সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
    			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
    

    চলচ্চিত্রঃ ‘চৌরঙ্গী’

  • স্বপ্নে দেখি একটি নতুন ঘর

    বাণী

    স্বপ্নে দেখি একটি নতুন ঘর
    তুমি আমি দু’জন প্রিয় তুমি আমি দু’জন।
    বাহিরে বকুল-বনে কুহু পাপিয়া করে কুজন।।
    		আবেশে ঢুলে’ ফুল-শয্যায় শুই
    		মুখ টিপে হাসে মল্লিকা যুঁই
    কানে কানে গানে গানে কহে ‘চিনেছি উতল সমীরণ’।।
    পূর্ণিমা চাঁদ কয়, গান আর সুর, চঞ্চল ওরা দু’জন
    প্রেম-জ্যোতি আনন্দ-আঁখিজল, ছল ছল ওরা দু’জন।
    মৌমাছি কয়, গুন্‌ গুন্‌ গান গাই
    মুখোমুখি দু’জনে সেইখানে যাই
    শারদীয়া শেফালি গায়ে পড়ে কয় —
    ‘ব্রজের মধুবন — এই তো ব্রজের মধুবন’।।
    
  • হলুদ গাঁদার ফুল রাঙা পলাশ ফুল

    বাণী

    হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
    এনে দে এনে দে নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।
    কুস্‌মী-রঙ শাড়ি, চুড়ি বেলোয়ারি
    কিনে দে হাট থেকে, এনে দে মাঠ থেকে
    বাবলা ফুল, আমের মুকুল, নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
    তুর্‌কুট্‌ পাহাড়ে শাল-বনের ধারে বস্‌বে মেলা আজি বিকাল বেলায়,
    দলে দলে পথে চলে সকাল হতে বেদে-বেদেনী নূপুর বেঁধে পায়
    যেতে দে ওই পথে বাঁশি শুনে’ শুনে’ পরান বাউল
    নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
    পলার মালা নাই কী যে করি ছাই,
    খুঁজেএনে দে এনে দে রে সিঁয়া-কূল
    নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
    

    সিনেমা: সাপুড়ে

  • হেরা হতে হেলে দুলে নূরানী তনু

    বাণী

    হেরা হতে হেলে দুলে নূরানী তনু ও কে আসে হায়,
    সারা দুনিয়ার হেরেমের পর্দা খুলে খুলে যায় —
    সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
    তার ভাবে বিভোল রাঙা পায়ের তলে
    পর্বত জঙ্গম টলমল টলে,
    খোরমা খেজুর বাদাম জাফরানি ফুল ঝ’রে ঝ’রে যায় —
    সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
    আসমানে মেঘ চলে ছায়া দিতে,
    পাহাড়ের আঁসু গলে ঝরনার পানিতে,
    বিজলি চায় মালা হতে,
    পূর্ণিমার চাঁদ তার মুকুট হতে চায় —
    সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।