বাণী

গিরিধারী লাল কৃষ্ণ গোপাল যুগে যুগে হ’য়ো প্রিয়
জনমে জনমে বঁধু তব প্রেমে আমারে ঝুরিতে দিও॥
	তুমি চির চঞ্চল চির পলাতকা
	প্রেমে বাঁধা প’ড়ে হ’য়ো মোর সখা
মোর জাতি কুল মান তনু মন প্রাণ হে কিশোর হ’রে নিও॥
রাধিকার সম কুব্জার সম রুক্সিণী সম মোরে
গোকুল মথুরা দ্বারকায় নাথ রেখো তব সাথী করে।
	গোপনে চেয়ো সব শত গোপীকায়
	চন্দ্রাবলী ও সত্যভামায়
তেমনি হে নাথ চাহিও আমায় লুকায়ে ভালেবাসিও॥

বাণী

মেঘলা নিশি ভোরে মন যে কেমন করে
তারি তরে গো মেঘ-বরণ যার কেশ।
বুঝি তাহারি লাগি’ হয়েছে বৈরাগী
গেরুয়া রাঙা গিরিমাটির দেশ।।
মৌরি ফুলের ক্ষেতে, মৌমাছি ওঠে মেতে
এলিয়েছিল কেশ কি গো তার এই পথে সে যেতে।
তার ডাগর চোখের ঝিলিক লেগে রাত হয়েছে শেষ (গো)।।
শিরিষ পাতায় ঝিরিঝিরি, বাজে নূপুর তারি
সোনাল ডালে দোলে তাহার কামরাঙা রঙ শাড়ি।
হয়েছি মন-ভিখারি কোন্‌ শিকারি আমি
উঠি পাহাড় চূড়ায়, ঝর্না জলে নামি
কালো পাথর দেখে জাগে কার চোখের আবেশ গো।।

বাণী

আজি আকাশ মধুর বাতাস মধুর, মধুর গানের সুর
			আজি ভুবন লাগে মধুর।
পরানের কাছে যেন আসিয়াছে হারানো প্রিয়া সুদূর।।
	একি মাধুরী জড়িত লতায় পাতায়,
	যাহা হেরি তাই পরান মাতায়,
অবনি ভরিয়া ঝরিছে লাবনি মাধুরীতে ভরপুর।।
আগেও ফুটেছে এ গাঁয়ের মাঠে পথপাশে ভাঁটফুল,
এই পথ বেয়ে জলে যেত বধূ পিঠভরা এলোচুল।
	আজ মনে হয় নতুন সকলি
	মধুময় লাগে বিহগ কাকলি
আজি অকারণ নেচে ফেরে মন যেন বনের ময়ূর।।

বাণী

সোনার মেয়ে! সোনার মেয়ে!
তোমার রূপের মায়ায় আমার নয়ন- ভুবন গেল ছেয়ে'।।
	ঝরে তোমার রূপের ধারা—
	চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা,
আকাশ-ভরা হাজার তারা তোমার মুখে আছে চেয়ে'।।
	কোন গ্রহ-লোক ব্যথায় ভ'রে
	কোন অমরা শূন্য ক'রে
(ওগো) রাখলে চরণ ধরার পরে রঙ-সায়রের রঙের নেয়ে।
	শিল্পী আকেঁ তোমার ছবি
	তোমারি গান গাহে কবি
নিশীথিনী হারিয়ে রবি চাঁদ হাতে পায় তোমায় পেয়ে।।

বাণী

শেষ হ’ল মোর এ জীবনে ফুল ফোটাবার পালা।
ওগো মরণ, অর্ঘ্য লহ সেই কুসুমের ডালা।।
	কাটলো কীটে ঝরলো যে-ফুল
	শুকালো যে আশার মুকুল,
তাই দিয়ে হে মরণ তোমার গেঁথেছি আজ মালা।।
সুন্দর এই ধরণীতে কতই ছিল সাধ বাঁচিতে,
হঠাৎ তোমার বাজলো বেণু বিদায়-করুণ ভৈরবীতে।
	তোমার আঁধার-শান্ত কোলে
	শ্রান্ত তনু পড়ুক ঢ’লে,
আর সহে না কুসুম-বিহীন কন্টকের জ্বালা।।

বাণী

আমি পূরব দেশের পুরনারী (গো)।
গাগরি ভরিয়া এনেছি গো অমৃত-বারি।।
পদ্মকুলের আমি পদ্মিনী-বধূ
এনেছি শাপলা-পদ্মের মধু
ঘন বন ছায়ায় শ্যামলী মায়ায়
শান্তি আনিয়াছি ভরি’ হেমঝারি।।
আমি শঙ্খ-নগর হতে আনিয়াছি শাখা, অভয়শঙ্খ,
ঝিল্‌ ছেনে এনেছি সুনীল কাজল গো —
বিল্‌ ছেনে অনাবিল চন্দন-পঙ্ক (এনেছি)।
এনেছি, শত ব্রত-পার্বণ-উৎসব
এনেছি, সারস হংসের কলরব
এনেছি, নব আশা-ঊষার সিন্দুর
মেঘ-ডম্বরু সাথে মেঘ-ডুমুর শাড়ি।।